নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– উত্তপ্ত বাংলাদেশ। আক্রান্ত হিন্দুরা। নির্বিচারে চলছে ধরপাকড়, অত্যাচার। জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, এমনটাই অভিযোগ। এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে সাধু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সহ ইসকনের আরও দুই সন্ন্যাসীকে। এমনকি সেদেশে ভারতের জাতীয় পাতাকা অবমাননার নির্লজ্জ ছবিও উঠে এসেছ। বাংলাদেশে ঘটে চলা এই সব ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে প্রতিবাদে সরব হচ্ছে একাধিক সংগঠন। এবার সেই প্রতিবাদের আঁচ পড়ল শহর দুর্গাপুরেও। কেন্দ্রকে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে এদিন দুর্গাপুরের পথে নেমে প্রতিবাদে সরব হয় বিশ্ব সনাতনী হিন্দু একতা সংঘ। বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সহ আরও দুই ইসকনের সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার ও ভারতের জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে সরব হন সংঘের সদস্যরা। এদিন দুর্গাপুরের মায়াবাজার এলাকায় হরিনামের মাধ্যমে চলে প্রতিবাদ।
বিশ্ব সনাতনী হিন্দু একতা সংঘের সদস্য অজয় বাউরি এদিন বলেন, “আমরা বাংলাদেশের শান্তি চাইছি। ইসকনের সন্ন্যাসীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি রাখছি। ভারতের জাতীয় পতাকা আবমাননার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভারত সরকার দ্রুত এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবো।”
প্রসঙ্গত গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই সেদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। সেদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবিতে গঠিত হয় বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট। যার মুখপাত্র নির্বাচিত হন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে বারেবারেই সরব হয়েছেন তিনি। একটি সমাবেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গত সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। খারিজ হয়ে যায় জামিনের আবেদনও। এরই মধ্যে চিন্ময়কৃষ্ণকে খাবার, ওষুধ এবং কিছু টাকা দিতে গিয়ে গ্রেফতার হন ইসকনের দুই সন্ন্যাসী রুদ্রপ্রতি কেশব দাস এবং রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাস। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ওই দু’জন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে এঁকে রাখা হয়েছে ভারতের পতাকা। সেই জাতীয় পতাকা মাড়িয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকছে-বেরচ্ছে পড়ুয়ারা। বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির মাঝে এমন লজ্জাজনক ছবি সামনে এসেছে। যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাছাই করেনি এই বাংলায় ওয়েব পোর্টাল।
বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন এই ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানিয়ে লিখেছেন, “দুঃখ এই, বাংলাদেশ নামের দেশটি অসুস্থ অশিক্ষিত অপ্রকৃতিস্থ লোকের দেশ হয়ে উঠছে।”