eaibanglai
Homeএই বাংলায়প্রকৃতিমুখী জীবনধারা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে খালি পায়ে ভারত ভ্রমণ

প্রকৃতিমুখী জীবনধারা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে খালি পায়ে ভারত ভ্রমণ

সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- আধুনিক ও উন্নত হওয়ায়র সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির থেকে দূরে সরে যাচ্ছে মানব সমাজ। তথাকথিত উন্নত মানের জীবনযাত্রায় অংশ নিতে গিয়ে আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। যা আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে জুড়ে থাকতে যেমন সহায়তা করত ও শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষা প্রদান করত।

অধুনিক জীবন যাত্রায় আমরা বেছে নিচ্ছি অনুশাসনহীন অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং কীটনাশক ও রাসায়নিক সার মিশ্রিত অজৈব পদ্বতিতে উৎপাদিত খাদ্য সামগ্রী এবং রেডিমেড বা প্যাকেটজাত খাবার। যার ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফল, শাক সবজি, চাল, ডাল, আটা, ময়দা এমনকি প্রাণীজ খাবার যেমন ডিম, দুধ, দগ্ধজাত সামগ্রী, মাছ, মাংস যে যে খাদ্য় সামগ্রী খাচ্ছি তার সব কিছুর সঙ্গে মিশে থাকছে বিষ। যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে কন্স্যার সহ নানা দূরোরোগ্য ব্য়াধির সৃষ্টি করছে, শরীর ঘটাচ্ছে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। যা ডেকে আনছে অবসাদ সহ নানা মানসিক রোগ।

এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে তার মূলে অর্থাৎ প্রকৃতির কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এক অভূতপূর্ব উদ্যোগ নিয়েছেন গুজরাটের ভাওনগর জেলার বাসিন্দা হামিরভাই বাড়াইয়া। প্রকৃতিমুখী জীবন ধারা নিয়ে মানুষকে সতেচন করতে ও রাসায়নিক ও কীটনাশক বর্জিত আমাদের দেশীয় চিরাচরিত জৈবিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজকে ফিরিয়ে আনতে খালি পায়ে ভারত ভ্রমণ করে চলেছেন হামিরভাই। বিগত ১৫ বছর ধরে দেশজুড়ে খালি পায়ে পদভ্রমণ করছেন এই আজব মানুষটি। সঙ্গে বিতরণ করে চলেছেন বিনা মূল্যে জৈব বীজ।

সম্প্রতি এমনই আজব মানুষটির দেখা মিলল বাঁকুড়ার জৈব বীজ ও কৃষি মেলায়। সুদূর গুজরাট থেকে তিনি এখানে এসেছেন বিনামূল্যে জৈব বীজ বিতরণ করতে। আজব মানুষটি কখনও চটি জুতো পড়েন না, বৈজ খাদ্য সামগ্রী ছাড়া খাবার খান না, মাটি বা লোহার বাসন ভিন্ন অন্য বাসনে রান্না করা জিনিস গ্রহণ করেন না, দিনে মাত্র একবারই খাবার গ্রহণ করেন তাও সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে, সপ্তাহে দুদিন উপবাস ব্রত আর একদিন মৌন ব্রত পালন করেন। তাই দেশ ভ্রমণের সময় বাইরে বিষ খাবারের হাত থেকে বাঁচতে সঙ্গে রাখেন বাড়িতে তৈরি শুকনো খাবার।

হামিরভাইয়ের মতে মাটির স্পর্শ এবং বৈদিক নিয়ম মেনে আহার গ্রহণ প্রকৃতিমুখী জীবন ধারার জন্য অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি উপবাস ও মৌনব্রত চিত্তশুদ্ধিতে সাহায্য় করে যা অন্তর্মনকে শান্তি প্রদান করে প্রকৃতিতে লয় হতে সাহায্য় করে।

কয়েশো বছর ধরে পরাধীনতাজনিত হীনমন্যতার কারণে আমারা ক্রমাগত পশ্চিমী সংস্কৃতি ও জীবনধারাকে আপন করে চলেছি। ভুলে যাচ্ছি নিজেদের মূল্যবান ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। পশ্চিমী জীবনধারা কিছু ব্যবহারিক সুখ স্বাচ্ছন্দ প্রদান করলেও আমাদের নিয়ে চলেছে (শারীরিক ও মানসিক) অবক্ষয়ের দিকে। এই অবক্ষয় থেকে উদ্ধার করতে এখন এই আজব হামিরভাইদেরই দরকার সমাজের।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments