নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- এবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিভিসির বস্তি উচ্ছেদের বিরোধীতায় সরব হলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক। প্রয়োজনে বুলডোজারের সামনে দাঁড়ানোর হুঁশিয়ারিও দিলেন। যা নিয়ে কটাক্ষের সুর চড়ালেন রাজ্যের মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত রাষ্ট্রায়ত্ত ডিভিসির অধীনস্থ দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের (ডিটিপিএস) নতুন ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন-ক্ষম ইউনিট প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভাঙা হয়েছে বহু বেদখল আবাসন। এছাড়াও ডিভিসির জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ বস্তি উচ্ছেদ অভিযানও শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। গত বুধবারই ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লী খাটালপাড়া বস্তি এলাকায় বিশাল বাহিনী নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান করা হয়। যদিও সেই অভিযানে কোনো প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি বলে জানান দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার(সিভিল) অমিত কুমার মোদি।
কিন্তু ডিভিসির এই উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করলেন খোদ বিজেপি বিধায়ক। এদিন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বস্তিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। বস্তিবাসীদের জন্য পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণ ও সময় চেয়ে এদিন তিনি রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে বলেন,”কারখানা সম্প্রসারণ হতে গেলে জমির প্রয়োজন আছে। কিন্তু বস্তিবাসীরা যাবে কোথায়। রাজ্য সরকারের অনেক জমি পড়ে রয়েছে। আমরা বলেছিলাম সেই জমি দিতে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আমরা বাড়ি বানিয়ে দেবো। কিন্তু রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না। ফলে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন দরীদ্র বস্তীবাসীরা।” রাজ্য সরকারের পাশাপাশি ডিভিসি কর্তৃপক্ষকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন,”ডিভিসি কর্তৃপক্ষ বলছে বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে। কিন্তু আমি বলতে এসেছি সময় দিতে হবে সঙ্গে ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। আমি তিন মাস সময় চেয়েছি। তিন মাস যেন এলাকায় কেউ না যায়। তিন মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করতে গেলে আমি বুলডোজারের সামনে দাঁড়াবো। ডিভিসির চেয়ারম্যান এবং দুর্গাপুরের মহকুমা শাসকের সাথেও কথা বলবো। পুনর্বাসনের জমির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি করছি।”
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে খোদ বিজেপি বিধায়কের এহেন হুঁশিয়ারি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের যিনি এখানে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি বলছেন বুক চিতিয়ে দাঁড়াবেন! এর আগেও তো এরকম উক্তি শুনেছি। ওনাদের একজন সংসদ ছিলেন, যাকে খুব কম দেখা যেত। উনি বলেছিলেন আমি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে পড়বো। সেই বুক চিতাতে দেখিনি তো!এধরণের বুলি শুনতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু এটা বোঝা উচিৎ, যে রাজ্য সরকারে দেওয়া জমিতেই কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রয়াত্ত সংস্থার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। কিন্তু তারা সেই জমি রক্ষা করতে পারেননি। এবং তাদের অপদার্থতার জন্যই এই সমস্যা হয়েছে। তাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে।”





