নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- শনিবার দুর্গাপুর ডিএভি মডেল স্কুলের অডিটোরিয়ামে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করার জন্য ‘আরোহণ’ নামে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন প্রফেসর অরবিন্দ চৌবে (ডিরেক্টর এন আই টি , দুর্গাপুর) এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর প্রিয়দর্শী দে (ডিন, রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট, IISER , কলকাতা ), প্রফেসর কৌশিক দত্ত (অ্যাসোসিয়েট ডিন অফ হর্টিকালচার, ডিপার্টমেন্ট অফ ফিজিক্যাল সায়েন্স, IISER , কলকাতা ) , শ্রী সঞ্জয় কুমার (রেজিস্ট্রার, এনআইটি, দুর্গাপুর) এবং সোমশুক্লা মাইতি (সিনিয়র সায়েন্টিস্ট, CSIR, CMERI)। এছাড়াও উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ডিএভি এল এম সি চেয়ারম্যান শ্রী এস কে পাল মহাশয়, শ্রী এন কে মোহান্তা (এল এম সি, ম্যানেজার ) এবং ডি এ ভি পশ্চিমবঙ্গ শাখার বিভিন্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল মহোদয়-মহোদয়া গণ। তাঁরা উপস্থিত থেকে এই অনুষ্ঠানকে গৌরবান্বিত করেন।
আমন্ত্রিত অতিথিদের তিলক পরিয়ে চারা গাছ প্রদান করে বরণ করে নেওয়া হয়। তারপর গায়ত্রী মন্ত্র সহযোগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা করেন অতিথিগণ।স্কুল কয়্যার গ্রুপের উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ ঘটে।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা ও পশ্চিমবঙ্গ ডি এ ভি সংস্থার আঞ্চলিক নির্দেশিকা পাপিয়া মুখার্জি অতিথি দের স্বাগত জানিয়ে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর সিবিএসসি বোর্ড পরীক্ষায় সফল শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বিদ্যালয়ের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন । তিনি তাঁর ভাষণে বলেন ৫০ বছর আগে যে ডিএভি মডেল স্কুল নামক চারাগাছ টি রোপণ করা হয়েছিল আজ তা পত্র, পুষ্পে, বিকশিত, ছায়াদানে সমৃদ্ধ।
এবছর দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ৩৯৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯০ শতাংশ ও তার বেশি নম্বর পেয়েছে ১৭৫ জন। দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ৫৩৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৪ জন ৯০% ও তার বেশি নম্বর পেয়েছে । উত্তম ফলাফলের জন্য ১৬ জন শিক্ষার্থীকে স্কুল স্কলারশিপ দিয়ে সম্মানিত করেছে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর সিবিএসসি বোর্ড রেজাল্ট ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা, খেলাধুলা, সহপাঠ্যক্রমিক বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাফল্যের কথাও তিনি তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে শুধুমাত্র পড়াশোনা নয় পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা বা অন্যান্য সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর মান উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে যাতে ছাত্রছাত্রীরা কখনোই পড়াশুনায় তাদের উৎসাহ হারিয়ে না ফেলে। তাদের প্রতিভা বিকশিত করার আদর্শ স্থান বিদ্যালয়। এই সাফল্যের পিছনে শিক্ষক শিক্ষিকা অশিক্ষক কর্মচারী সকলের সহযোগিতার কথা তিনি উল্লেখ করেন। শিক্ষার লক্ষ্য কেবলমাত্র জ্ঞানার্জন নয়, চরিত্র গঠনও শিক্ষা গ্রহণের অন্যতম এক উদ্দেশ্য যা সারাজীবন তাদের পাথেয়।
অতিথি গণ তাঁদের ভাষণে সকল কৃতি ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানান ও বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা, তাদের শৃঙ্খলা বোধ প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁরা আরো বলেন শিক্ষার্থীদের ওপর অভিভাবকগণ যেন তাঁদের মতামত চাপিয়ে না দেন। শিক্ষার্থীদের সহজাত প্রতিভা যেন পূর্ণতা পায়। প্রধান অতিথি তাঁর ভাষণে বলেন সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাকেও গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে আমরা শিখে চলেছি। আর এই শেখাই আমাদের নতুন পথ দেখাবে। তিনি আরো বলেন শিক্ষার্থীরা সকলের আশীর্বাদ নিচ্ছে এটা আমাদের দেশের সংস্কৃতি। তাই শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা যেন তারা না ভোলে।
এরপর শুরু হয় একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় মহাভারত অবলম্বনে “একলব্য – বীরত্বের বহ্নি”। এই মূল বিষয় কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা নৃত্য, সমবেত সংগীত, ইত্যাদি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিবেশন করে । “একলা চলো রে” – এক নতুন পথের দিশারী – এই ভাবনাকে কেন্দ্র করে যে নৃত্য, গীত, আবৃত্তি শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে তা দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে।
এরপর কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে শংসাপত্র ও মেডেল তুলে দেন অতিথিগণ। শিক্ষা ক্ষেত্রে ও সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা দেরও শংসাপত্র ও মেডেল প্রদান করে সম্মান জানানো হয়। সবশেষে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ও সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানটির শুভ সমাপ্তি ঘটে।





