eaibanglai
Homeএই বাংলায়বিয়ের দিন প্রকাশিত হলো তরুণ কবির স্বপ্নের কাব্যগ্রন্থ

বিয়ের দিন প্রকাশিত হলো তরুণ কবির স্বপ্নের কাব্যগ্রন্থ

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, কলকাতা -: সেদিন ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার নামখানার তরুণ কবি ধ্রুববিকাশ মাইতির বিয়ের দিন। এক অদ্ভুত ও অজানা রোমান্টিক অনুভূতি নিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে আছেন হবু পাত্র। পাশে পাত্রী অনুষ্কা, মাঝে মাঝে সবার দৃষ্টি এড়িয়ে আড়চোখে পাশে বসা হবু স্বামীকে লাজুক চোখে দেখছেন। ওদিকে পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র উচ্চারণ করছেন। বরযাত্রী ও কনে পক্ষের নিমন্ত্রিত অতিথিদের পাশাপাশি উপস্থিত আছেন কনে পক্ষের আত্মীয় স্বজনরা। বাড়ির কচিকাচারা সেজেগুজে নিজেদের মত করে আনন্দে মশগুল। একেবারেই চেনা পরিবেশ, চেনা ছন্দ। বিয়ের প্রাথমিক কাজ শেষ। হিন্দুরীতি মেনে বাকি আছে সিঁদুর দান পর্ব। সবাই সিঁদুর দান দেখার জন্য উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করছেন। সিঁদুর দানের পর কী হতে চলেছে সেটা উপস্থিত কেউই হয়তো আন্দাজ করতে পারেননি!

সম্ভবত বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য সিঁদুর দান পর্বের পরেই ঘটে গেল চমকপ্রদ এক অভাবনীয় ঘটনা। নিজের আধারহীন অবিবাহিত জীবনের কথা রোমান্টিক কবির কলমে ফুটে উঠল। নববধূর উদ্দেশ্যে অনুচ্চারিত কিন্তু লিখিত ‘এই জল হয়ে থাকা জীবনে/ তুমি পাত্র হয়ে রেখ আমায় যত্নে’ বাক্য বন্ধনীর হাত ধরে প্রকাশিত হলো তরুণ কবি ধ্রুববিকাশ মাইতির ‘চোখের ভিতর মাছরাঙা’। কবিতার মত বিয়ে ছন্দোময় হয়ে নববধূর হাত ধরে কবির জীবন মাছরাঙার রঙের মতন রঙিন হতে চলেছে – এই চিত্র ধরা আছে বইটির মধ্যে। বইটি তিনি উৎসর্গ করেছেন নববধূ অনুষ্কাকে।

রোমান্টিক কবির কাছে ‘হৃদয়ের চোখে বড় ফুল নেই পৃথিবীতে’। তাই অনায়াসেই হৃদয়ের পাথর সরিয়ে যে গাছ হৃদয়ের মধ্যেই জন্ম নেয়, দেয় সুন্দর ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি এবং স্নেহ, শক্তি ও আশাবাদের প্রতীক ‘সেই গাছের নাম দেই “অনুষ্কা” – এই বাক্য বন্ধনী এক অসাধারণ দার্শনিক তাৎপর্য বহন করে। এর মধ্যেই ধরা পড়েছে সমগ্র কাব্যগ্রন্থের প্রতিচ্ছবি।

কাব্য থেমে থাকেনা। সেখান থেকে একটু এগিয়ে ‘শূন্যস্থান’ পূরণ করতে গিয়ে ‘…মানুষও কম পড়ে যায় কখনো’- আধুনিক যুগের বাস্তব নিষ্ঠুরতা ধরা পড়ে। পাশে লোক থাকে প্রচুর, কিন্তু কথা বলার মত কেউই থাকেনা। এটাই আধুনিক যুগের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি!সবাই তখন হয়তো মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রাখতে ব্যস্ত!

এইভাবে প্রতিটি কবিতার মধ্যে ধরা পড়েছে কবির হৃদয় নিঙড়ানো ভাবনার কথা। একটা শেষ হতে না হতেই হাজির হয়ে যায় নতুন আর এক ভাবনা। সেই ভাবনার রথে চেপে কাব্যরসিক পাঠক সহজেই পৌঁছে যাবে অন্য এক ভাবনার জগতে। সীমিত পরিসরে বিস্তারিত আলোচনা করা যেমন সম্ভব নয় তেমনি উচিতও নয়। কারণ সেক্ষেত্রে পাঠকের আগ্রহ কমে যেতে পারে!

সমুদ্রের ভয়ংকর ঢেউয়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকা রোমান্টিকতা উপলব্ধি করতে হলে যেমন সমুদ্রে নামতেই হয়, তেমনি এই কাব্যগ্রন্থের রস উপলব্ধি করতে হলে সমগ্র কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা পাঠ করতেই হবে। তবেই কাব্যরসিক পাঠকের কাব্য পিপাসা মিটবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments