সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– সরকারি স্কুলে ডোনেশন নেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠল আসানসোলের ইসমাইলে তুলসীরাণী গার্লস হাইস্কুল চত্বর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হস্তক্ষেপ করতে হয় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে।
জানা গেছে তুলসীরাণী গার্লস হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ নতুন বর্ষে ভর্তির জন্য ১০০০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে। যারা ওই টাকা দিতে পারছে তাদের পাঠ্য পুস্তক দেওয়া হচ্ছে আর যারা দিতে পারছে না তাদের নতুন ক্লাসের পুস্তক দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবাদে এদিন স্কুল চত্বরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। পাশাপাশি ওই অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহারে দাবি জানান তাঁরা।
অভিভাবকদের দাবি তাঁরা সকলেই দিন আনি দিন খাই পরিবার থেকে এসেছেন। কেউ দিন মজুরি বা কেউ লোকের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এক্ষেত্রে তাঁদের পক্ষে ওই অতিরিক্ত ফি জোগার করা সম্ভব নয়। কারো আবার দুই কি তিন সন্তান একসঙ্গে ওই স্কুলে পড়ে। সেক্ষেত্রে তাঁকে তিন হাজারা টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি স্কুলে ডোনেশন কেন নেওয়া হবে? সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
অতিরিক্ত ফি নেওয়ার কথা স্বীকার করে নেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর দাবি স্কুলের বেশকিছু শিক্ষিকা অবসর নিয়েছেন। তাঁদের জায়গায় চুক্তির ভিত্তিতে কয়েক জন শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়ার সাফাই কর্মী ও নাইট গার্ড নেওয়া হয়েছে। এঁদের সকলের বেতনের জন্য ও স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে ওই অতিরিক্ত ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন ওই সামান্য ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পরিচালন সমিতিই ঠিক করেছে। তবে পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ডিইও বা ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসার তমোজিৎ চক্রবর্তীর কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এইভাবে কোন স্কুল ডোনেশন নিতে পারেনা। ঠিক কি হয়েছে, তা জানতে ডিআই বা জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। রিপোর্টে যদি নিয়ম ভাঙার বিষয়টি প্রমানিত হয়, তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দাবি করেন তিনি।