নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- সাঁওতালি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষার উন্নয়ন সহ কয়েক দফা দাবিতে বুধবার সকাল থেকে আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের ১২ ঘণ্টা পথ অবরোধের ডাকে বিপযর্স্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পরিবহন ব্যবস্থা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রভাব পড়েছে পশ্চিমের জেলাগুলিতে। পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে।
দুর্গাপুরেও এদিন সকাল থেকে পথ অবরোধে সামিল হয় ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের সদস্যরা। জাতীয় সড়ক ও সার্ভিস রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে আদিবাসী সমাজের মানুষজন। যার জেরে ব্যাহত হয় যান চলাচল।
অন্যদিকে শিল্পাঞ্চল ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষিরপাই, হালদার দিঘি মোড়, দাসপুর, চন্দ্রকোণা রোড, গড়বেতা, কেশপুর, ডেবরা, ঝাড়গ্রামের খড়িকামাথানি, গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি মোড়, ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ফেকো, ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক গজাশিমূল,পুরুলিয়ার নেতুরিয়া ব্লকের হরিডি, সাঁতুড়ি ব্লকের বেনাগড়িয়া, হুড়া ব্লকের লালপুর, মানবাজারের সিধু কানুহু মোড়,বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বড়জুড়ি, হেভির মোড়-সহ একাধিক এলাকায় পথ অবরোধে সামিল হয় আদিবাসী ওই সংগঠনের সদস্যরা। আর তাদের এই ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচিতে বুধবার সকাল থেকে বিশেষত রাজ্যের জঙ্গলমহল এলাকায় যান চলাচল রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত সাঁওতালি মাধ্যমে পঠন পাঠনের পরিকাঠামো উন্নয়ন, আদিবাসী পড়ুয়াদের জন্য বন্ধ হোস্টেল খোলা, ভুয়ো এস টি সংশাপত্র প্রদান বন্ধ, পৃথক সাঁওতালি এডুকেশন বোর্ড ও পশ্চিমাঞ্চল ডেভলপমেন্ট বোর্ড গঠন, বনভূমির পাট্টা প্রদান সহ প্রায় প্রায় ১২ দফা দাবিকে সামনে রেখে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল। তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা খনির জন্য আদিবাসীদের উচ্ছেদ বন্ধ করা। অভিযোগ বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসন, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর এমনকি খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বারাবার আবেদন জানিয়েও কোনো দাবি পূরণ হয়নি। তাই নতুন বছরের শুরুতেই আন্দোলন জোরদার করেছে আদিবাসী সংগঠনটি। দাবি পূরণ না হলে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন আদিবাসীদের এই সংগঠন।