জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরাঃ- শীতকাল মানেই মেলা। সামাজিক বা ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মেলা বসে। একঘেয়েমি জীবনে নিয়ে আসে নতুন প্রেরণা। স্হানীয় অর্থনীতিতে একটা জোয়ার আসে। শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা থেকে শুরু করে জয়দেব কেন্দুলির মেলা – সর্বত্র আলাদা উৎসাহ দ্যাখা যায়।
আরও একধরনের ভিন্ন স্বাদের মেলা এইসময় দ্যাখা যায়। সেটা হলো বইমেলা। এখন যেমন কলকাতায় চলছে আন্তর্জাতিক বইমেলা। রাজ্যের শতাধিক পুর এলাকাতেও বইমেলা হয়। শহর না হলেও সেমি শহরগুলোতেও বইমেলা বসে। বিভিন্ন প্রকাশক নতুন নতুন লেখক লেখিকাদের লেখা বই নিয়ে বইমেলায় হাজির হয়। কখনো কখনো বিখ্যাত লেখক লেখিকারা মেলার স্টলে হাজির হন। তাদের সঙ্গে আগ্রহী পাঠকদের সরাসরি সাক্ষাৎ ঘটে। একটা আলাদা মেজাজ দ্যাখা যায়।
কিন্তু অবস্থানের দিক থেকে গুসকরার একটা আলাদা গুরুত্ব থাকলেও এখানে কোনো বইমেলা হয়না। গুসকরা পুর এলাকায় পাঁচটি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি কলেজ আছে। আশেপাশের বহু এলাকা গুসকরার উপর নির্ভরশীল। সড়কপথ ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল। সর্বোপরি গুসকরা একটি সাংস্কৃতিক প্রবণ এলাকা। বহু মানুষ নিয়মিত সাহিত্যচর্চা করেন। অথচ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এখানে কোনো বইমেলা হয়না। এমনকি একমাত্র সরকারি পাঠাগারে পাঠক কার্যত নাই। এটা নিয়ে বইপ্রেমী মানুষের মধ্যে একটা আক্ষেপ থেকে গ্যাছে।
কথা হচ্ছিল গণপুরের তৃণা মুখার্জ্জীর সঙ্গে। বইয়ের প্রতি এবং একইসঙ্গে গুসকরার প্রতি তার একটা আলাদা টান আছে। প্রতিবছর সে বন্ধুদের সঙ্গে কলকাতার বইমেলায় যায়। কিন্তু দূরত্বের জন্য যথেষ্ট সমস্যা হয়। তৃণার বক্তব্য – গুসকরায় যদি বইমেলা হতো তাহলে একটু বেশি সময় ধরে আমরা মেলায় থাকতে পারতাম। এমনকি আমরা বন্ধুবান্ধবরা যেসব বই লিখি সেগুলো পরিচিতজনদের মধ্যে বিক্রি করার একটা সুযোগ পেতাম। এছাড়াও গুসকরার পাঠাগারটি যদি শহরের প্রাণকেন্দ্রে আনা হয় তাহলে হয়তো সেখানে যাওয়ার একটা সুযোগ হতো।
বইমেলার আয়োজন করার বিষয়ে প্রশ্ন করতে গুসকরার পুরপ্রধান কুশল মুখার্জ্জী বললেন – ভাবনাটা আমাদের মাথায় আছে। বইয়ের প্রতি স্হানীয় মানুষের আবেগকে মাথায় রেখে আমরা একটা উদ্যোগ নিচ্ছি। ইতিমধ্যেই আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমাদের বিধায়কের সঙ্গে আলোচনা করেছি।আশাকরি পরের বছর গুসকরার বুকে বইমেলা হবে। পাঠাগারের বিষয়ে তিনি বললেন – পাঠাগারটি যাতে শহরের মাঝখানে আনা যায় তার জন্য আমরা খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসব। আশাকরি বইপ্রেমীদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবেন।