শুভ্রাচল চৌধুরী,বাঁকুড়া:- রাজ্যে সাঁওতালি ভাষায় মাধ্যমিকে প্রথম হয়ে নজর কেড়েছে লাল মাটির দেশ বাঁকুড়ার চাঁদড়া কল্যাণ সংঘ হরিজন হাই স্কুলের ছাত্র লক্ষিন্দর টুডু। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬১৪।
লক্ষিন্দরের এই সফলতায় সকলে খুশি। শুধু বাঁকুড়া জেলা নয়, সমগ্র আদিবাসি সম্প্রদায়ের নাম উজ্জ্বল করেছে লক্ষিন্দর। কিন্তু এই সফলতা সহজে আসেনি। রীতিমতো অভাব ও প্রতিকূলতা জয় করে সফলতার এই নজির গড়েছে প্রান্তিক এক ক্ষুদ্র চাষীর ছেলে লক্ষিন্দর। ছোট থেকেই অনটনের সংসারে বড় হয়ে ওঠা। কিন্তু ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি বিশেষ অনুরাগ ছিল চাঁদড়া কল্যাণ সংঘ হরিজন হাই স্কুলের এই ছাত্রের।
হাঁপানিয়া রামনাথপুর গ্রামে মারাং বুরু চাচো মার্শাল আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা বাবুনাথ টুডু, খুব কাছ থেকে দেখেছেন লক্ষিন্দরকে। বাবুনাথ জানান, লক্ষিন্দরের অধ্যাবসায়, পড়াশোনার প্রতি অনুরাগ ছিল অনবদ্য। আর পাঁচটা ছেলের মতো লক্ষিন্দরের মনোরঞ্জনের দিকে কোনরকম টান ছিল না । পড়াশোনার মধ্যেই নিমজ্জিত থাকতো। দিনে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পড়াশোনা করেছে।
সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষকের অভাব রয়েছে, নিজে পড়াশোনা করতে করতেও এই অভাবটা যথেষ্ট বুঝতে পেরেছে লক্ষিন্দর। সাঁওতালি শিশুদের কাছেও আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। এই ভাষা যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে সেই কারণেই বড় হয়ে নিজের মাতৃভাষায় শিক্ষকতা করতে চায় লালমাটির উজ্জ্বল এই ছেলে।