এই বাংলায় ওয়েবডেস্কঃ– রহস্যে ভরা, এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড। যার কণিকামাত্র মানব জাতি জানতে পেরেছে। যদিও এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে জানতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। তারই মাঝেই মহাজাগতিক নানা ঘটনার উন্মোচন হচ্ছে। এই বছরের আগস্ট মাসটি এমনই একটি মাস যে মাস জুড়ে নানা বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষ্মী থাকতে চলেছে পৃথিবীর মানুষ, যা কয়েক হাজার বছরে একবার ঘটে।
উল্লেখ্য চলতি বছরে চারটি সুপারমুনের মধ্যে ১ অগাস্ট দ্বিতীয় সুপারমুনের সাক্ষ্মী থাকল সকলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিরাটাকার ও উজ্জ্বল সোনালী রঙের চাঁদের দেখা মেলে আকাশে। এই চাঁদকে স্টার্জন মুনও বলা হয়। এই মাসেরই শেষ দিনে আবার চাঁদ দেখা দেবে সুপারমুন অবতারে। একই মাসে দ্বিতীয় পূর্ণিমা হওয়ায় একে বলা হবে ‘ব্লু মুন’।
আগামী ১০ আগস্ট বুধ গ্রহকে রাতের আকাশে খালি চোখে দেখা যাবে ভীষণ স্পষ্ট ভাবে। বুধ সৌরজগৎ এর নিকটতম গ্রহ। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে বুধ হল চন্দ্রের পুত্র। সৌরজগতের পৃথিবীসদৃশ-গ্রহগুলোর মধ্যে বুধ সবচেয়ে ছোট। এর আকার চাঁদের চেয়ে সামান্য বড়। দিনের বেলায় সূর্যের তীব্র আলোর কারণে এই গ্রহটিকে দেখা যায় না। এই গ্রহটি দেখার উপযুক্ত সময় ভোর বা গোধূলি। এছাড়া প্রদক্ষিণকালে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে বুধ চলে এলে বুধকে দেখা যায়। যা আগামী ১০ তারিখ ঘটতে চলেছে।
শুধু তাই নয়, অগাস্ট মাসের রাতের আকাশে দেখা যাবে উল্কা-বৃষ্টিও। গত ১৪ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে এই উল্কাবৃষ্টি, চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত । কিন্তু এই উল্কাপাত সব থেকে ভাল দেখা যাবে ১২ এবং ১৩ আগস্ট মাঝরাতে বা ভোরের আগে। এই উল্কা বৃষ্টি রঙিন এবং সংখ্যায় অনেক বেশি হবে। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০ থেকে ৭৫টি উল্কা দেখা যেতে পারে।
আগামী ১৬ আগস্ট চাঁদকে নিজের আসল আয়তনের চেয়ে অনেক ছোট দেখা যাবে। অর্থাৎ সাধারণভাবে চাঁদে যে আয়তন দেখা যায় তার থেকে ছোট দেখাবে চাঁদকে।
শুধু রাতেই নয়, এই আগস্ট মাসে দিনেও ঘটতে চলছে এক মহাজাগতিক ঘটনা। ১৮ই আগস্ট দিনে ভারতবর্ষের কোথাও কোনো বস্তুর ছায়া পড়বে না। কারণ, সূর্য পৃথিবীর ঠিক উপরে অবস্থান করবে। এই ঘটনাকে “জিরো স্যাডো ডে” বলা হয়। বিজ্ঞানীদের মতে এই দিনে সূর্যের রশ্মি উল্লম্বভাবে পড়ে, যার ফলে আমাদের ছায়া এখানে-সেখানে ছড়িয়ে না পড়ে, ঠিক আমাদের পায়ের নিচে তৈরি হয় এবং সেই কারণেই এটি আমাদের কাছে দৃশ্যমান হয় না।
চমকের এখানেই শেষ নয়। আগামী ২৭ অগাস্ট সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনিকে দেখা যাবে সব থেকে বড় আকারে। এমনকী এর বলয় এবং ৮৩টি উপগ্রহের কয়েকটিকেও দেখা যেতে পারে। এই সময় শনি গ্রহ সূর্যের ঠিক উল্টো দিকে থাকবে এবং পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করবে। যার ফলে, রাতের আকাশে খালি চোখে শনি গ্রহ ও তার বলয়ও দেখা যাবে। এই জ্যোতির্বিজ্ঞানী ঘটনাটি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বিরল ঘটনা হতে চলেছে, যা কয়েক হাজার বছর পর ঘটতে চলেছে ।