নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- কারখানা আবাসনের নতুন লাইসেন্সিং স্কিম বাতিল করে পুরনো স্কিম বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলন শুরু করলেন দুর্গাপুর মিশ্র ইস্পাত কারখানার প্রাক্তন কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের মিশ্র ইস্পাত কারখানার সামনে বিক্ষোভে সামিল হন কারখানার আবাসনের লিজ হোল্ডার প্রাক্তন কর্মী সংগঠনের সদস্য তথা শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। রোদ,জলে খোলা আকাশের নিচে এদিনের বিক্ষোভে অংশ নেন বয়স্ক অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা।
প্রসঙ্গত ইস্পাত কারখানার এই সমস্ত অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে কারখানার আবাসনে লিজ চুক্তির মাধ্যমে রয়েছেন। অভিযোগ তেত্রিশ মাস অন্তর লাইসেন্সিং স্কিম রিনিউয়ের কথা থাকলেও ইস্পাত কর্তৃপক্ষ তা করেনি। হঠাৎ করেই ১০-১১ বছর পরে চলতি বছরে (২০২৩ সালে) সেইল- এর নির্দেশ অনুযায়ী ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি নতুন স্কিম চালু করেছে। এই নতুন স্কিম অনুযায়ী যারা লিজ চুক্তির মাধ্যমে আবাসনে রয়েছেন তাদের লিজ পুর্ননবীকরণ করতে হবে। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত আন্দোলনরত প্রাক্তন ইস্পাত কর্মীদের অভিযোগ লিজ পুনর্নবীকরণ করতে গেলে নতুন যে নিয়ম-নীতির কথা বলা হয়েছে তা প্রচুর খরচ সাপেক্ষ এবং চুক্তির মেয়াদও কম।
কারখানার আবাসনের লিজ হোল্ডার প্রাক্তন কর্মী সংগঠনের সদস্য তথা ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মী যশোদা দুলাল চক্রবর্তী এদিন বলেন, “এই নতুন স্কিম গ্রহণযোগ্য নয় কারণ, নতুন স্কিমের যে ফিনান্সিয়াল প্যারামিটারস তা বহু গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যা প্রাক্তন কর্মীদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। পুরনো স্কিমে সিকিউরিটি ডিপোজিট রাখা হয়েছিল এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা,নতুন স্কিমে বাড়িয়ে তা চার লক্ষ টাকা করা হয়েছে। নতুন স্কিম অনুযায়ী বকেয়া টাকা জমা দিতে হবে। তার সঙ্গে তিন বছরের আগাম ভাড়া ইলেকট্রিসিটি, জল মেইনটেনেন্স বাবদ সব খরচ জমা দিতে হবে। সব মিলিয়ে যে পরিমাণ টাকার অঙ্ক দাঁড়াচ্ছে তা আমার মতো অনেকের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব নয়।”
অভিযোগ এভাবে প্রাক্তন কর্মীদের উপর অতিরিক্ত টাকার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে ইস্পাত কর্তৃপক্ষ। প্রাক্তন কর্মীদের দাবি এধরণের কোন চুক্তিই ছিল না ইস্পাত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। যে লাইসেন্সিং স্কিম ছিল তাতে রনিউয়ালের সঙ্গে শতকরা ১০ শতাংশ হারে ভাড়া সহ অন্যান্য খরচ বৃ্দ্ধির কথা ছিল। আন্দোলনরত অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন ইস্পাত কর্মীরা জানান তারা পুরনো স্কিম অনুযায়ী বর্ধিত হারে ভাড়া ও অন্যান্য খরচ দিতে রাজি আছেন। জোর করে নতুন স্কিম চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। তা না হলে প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন বলেও এদিন হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত প্রাক্তন ইস্পাত কর্মীরা।