সংগীতা চৌধুরী(চ্যাটার্জী)ঃ– গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন কর্মযোগী হওয়ার কথা, কর্মযোগী অর্থাৎ নিষ্কাম কর্মযোগী ফলের আশা না করে যে কাজ করে যাবে, কিন্তু আমরা তো সন্ন্যাসী নই আমরা তো সংসার ছেড়েছুড়ে আশ্রমে যাই নি, গৃহী মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু অর্থ সঞ্চয় করতে হয় সন্তানকে বড় করবার জন্য, নিজের মাথার উপর ছাদ তৈরি করার জন্য একটা বাড়ি তৈরি করতে হয় কিন্তু তখনই মনের মধ্যে প্রশ্ন আসে যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা অনুযায়ী নিষ্কাম ভাবে হলে কিভাবে এই সকল কাজ করব? এই সকল প্রশ্নের উত্তর খুব সুন্দরভাবে স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ তার কথার মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
মহারাজ বলেছেন যে গৃহী হিসেবে একজন মানুষের যা যা কর্তব্য তা অবশ্যই করতে হবে কিন্তু সেই কাজের পিছনে কোন আশা রাখা যাবে না। মহারাজের কথায়,“ সন্তানকে মানুষ করে তোলা আপনার কর্তব্য। কিন্তু সে বড় হয়ে আপনাকে দেখাশুনো করবে এই আশা রাখবেন না। টাকা জমানো, ফ্ল্যাট কেনা ইত্যাদি আপনার কর্তব্য।
একটা কাজ আপনি দু’ভাবে করতে পারেন। এক, নিজের স্বার্থে, নিজে লাভবান হওয়ার জন্য। দুই, কর্তব্য হিসেবে, স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়। কর্মযোগ হলো দ্বিতীয়টি। প্রথমটি আপনি করেন কর্তা হিসেবে। দ্বিতীয়টি করেন নিমিত্ত হিসেবে (মাধ্যম, medium)। তবে একটা কথা। একবারেই ১০০% নিষ্কাম সম্ভব নয়। চেষ্টা করে হয়তো ২০% নিষ্কামভাবে কাজ করলেন। মাসখানেক পরে ২৮ বা ৪০ শতাংশ। এরপর ৪৮% নিষ্কাম। এভাবে এগিয়ে যেতে হবে।”