সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- এক জন স্থায়ী শিক্ষিকার দায়িত্বে চলছে গোটা একটা স্কুল। চরম এই অব্যবস্থা ও অরাজকতার নজির ধরা পড়েছে বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকে। এখানকার শান্তাশ্রম গার্লস জুনিয়ার হাইস্কুলে রয়েছে ক্লাস ফাইভ থেকে এইট পর্যন্ত। যেখানে ছাত্রীর সংখ্যা তিনশোরও বেশী। কিন্তু স্কুলে রয়েছেন একজন মাত্র স্থায়ী শিক্ষিকা ও একজন অতিথি শিক্ষক। আর তাদেরকেই গোটা বিদ্যালয় সামলাতে হচ্ছে । স্বাভাবিকভাবেই স্কুলের পঠন পাঠন শিকেয় উঠেছে।
জানা গেছে ২০২১ সালে এই বিদ্যালয়ে মোট তিনজন শিক্ষিকা ছিলেন। দুজন শিক্ষিকা ট্রান্সফার নিয়ে অন্যত্র চলে যান, ফলে এই মুহূর্তে বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের একজন স্থায়ী শিক্ষিকা রয়েছেন এবং অপর একজন অতিথি শিক্ষক । স্বাভাবিকভাবেই সমস্ত বিষয়ে তাদের পক্ষে ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। এছাড়া পঠন পাঠন ছাড়াও মিড ডে মিল সহ বিদ্যালয়ের অফিসিয়ালি কাজও রয়েছে। সেই সমস্ত দায়িত্ব পালন করে আদৌ এক জন শিক্ষকের পক্ষে ক্লাস নেওয়া বা পড়ানো কতটা সম্ভবপর বা আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। ফলস্বরূপ শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে বিদ্যালয়ে আসা ছাত্রীদের। বিদ্যালয়ের এই চরম অব্যবস্থার কথা জানতে পেরে স্থানীয় সহৃদয় শিক্ষিত কয়েকজন তরুণী মাঝেমধ্যে বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস নেন। কিন্তু তাতেও পড়ুয়ারা কতটা লাভবান হচ্ছে তা নিয়ে সন্দিহান অভিভাবকেরা। কারণ পড়ুয়ারাই জানাচ্ছে প্রতিদিন স্কুলে একটি থেকে দুটি ক্লাস হয়। বাকি সময়টা তাদের বসে বসেই কাটাতে হয় । ফলে সিলেবাসও শেষ হয় না এবং পরীক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়।
পুরো বিষয়টি নিয়ে শান্তাশ্রম জুনিয়র হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শতাব্দী রায় জানান , বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা নেই, ফলে ক্লাস বন্ধ থাকে। স্থানীয় শিক্ষিত যুবতীদের দিয়ে মাঝে মাঝে ক্লাস করানো হয় । এমনকি বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডির কর্মীকে পর্যন্ত ক্লাস নিতে হয়। তাঁর অভিযোগ, এই সমস্যার কথা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত সমস্যার সমাধানে কোনও উদ্যোগ গ্রহন হয়নি। আর শান্তাশ্রম গার্লস জুনিয়ার হাইস্কুলের এই অব্যবস্থায় শিক্ষা দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বাঁকুড়া জেলার ডি.আই অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন পীযূষ কান্তি বেরা দাবি করেছেন স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেই দ্রুত এই সমস্যা মিটে যাবে।
অন্যদিকে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা দ্রুত সমস্য়া সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কবে যে স্কুলের এই অব্যবস্থা ঘুচবে সে প্রশ্নের উত্তর আপাতত কোনও পক্ষের কাছেই নেই।