eaibanglai
Homeএই বাংলায়স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ফলের চারা বিতরণ

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ফলের চারা বিতরণ

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মঙ্গলকোটঃ- মাঝে মাঝে সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণের ফলে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়লেও সেই ধাক্কা অল্প সময়ের মধ্যেই কাটিয়ে উঠতে পারি। কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে হলেও করোনা অতিমারির আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে আবার আমরা চেনা ছন্দোময় জীবনে ফিরে এসেছি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব উষ্ণায়নের আঘাতে বিশ্ব জুড়ে স্বাভাবিক জনজীবন চরম বিপর্যস্ত।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে পরিত্রানের উপায় খুঁজতে ত্রাহি ত্রাহি রব। উপায় জানা থাকলেও সেটার যথার্থ প্রয়োগের বিষয়ে আমরা অসচেতন।

এবছর গ্রীষ্মকালে এই রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উষ্ণতা শুরু হয় ৪০° দিয়ে। তারপর টি-২০ ক্রিকেটের ঢঙে ব্যাট চালিয়ে কোথাও কোথাও পৌঁছে যায় ৪৮° তে। একটা সময় মনে হচ্ছিল শেষ পর্যন্ত হয়তো হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলবে।

আবহাওয়াবিদদের অনুমান বর্তমান পরিস্থিতি বজায় থাকলে আগামী বছর তাপমাত্রা ৫০° দিয়েই হয়তো শুরু হবে। একটা সময় সেটা মানুষ সহ সমস্ত জীবকুলের সহ্য ক্ষমতা অতিক্রম করবে। ধীরে ধীরে সাধের পৃথিবী জনশূন্য হয়ে পড়বে। চন্দ্রযান পাঠানোর সাফল্যে আমরা আত্মহারা হলেও নিজেদের বেহিসেবী কাজের মাধ্যমে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছি সেদিকে খেয়াল থাকছেনা। বাঁচার একমাত্র পথ বৃক্ষরোপণ ও জীবাশ্ম জ্বালানি সহ পরিবেশন দূষণের উৎসগুলির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।

রাজনৈতিক মদতে বৃক্ষচ্ছেদনে উৎসাহি হলেও বৃক্ষরোপণের বিষয়ে আমাদের উৎসাহ যথেষ্ট কম। মিডিয়ায় ফুটেজ খাওয়ার বিষয়ে নেতাদের যতটা উৎসাহ দেখা যায় বৃক্ষরোপণের বিষয়ে সাধারণ মানুষের মনে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়ে তারা চরম ব্যর্থ। ফলে এগিয়ে আসতে হয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে।

দ্য টরেণ্টো-ক্যালকাটা ফাউন্ডেশন কানাডা -এর সক্রিয় সহযোগিতায় ও মঙ্গলকোটের নতুনহাট খাদি উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট, ভাতার, আউসগ্রাম (১নং ও ২নং) ব্লকের ৫৮ টি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের হাতে প্রায় সত্তর হাজার আম, কাঁঠাল, পেঁপে, পেয়ারা ও কলা গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়। এই গাছগুলি রোপণ করা হলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ তথা বিশ্ব উষ্ণায়নের হার কমবে অন্যদিকে তেমনি এলাকার বাসিন্দারা ফল খেতে পাবে। ভবিষ্যতে আরও বেশি ফলের গাছ রোপণ করার ব্যাপারে তারা উৎসাহি হবে।

সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও খাদি উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগের কথা জানতে পেরে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য দপ্তরের স্থায়ী সমিতির সদ্য নির্বাচিত কর্মাধ্যক্ষ তথা বন ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের স্থায়ী সমিতির সদস্য বিশ্বনাথ রায় তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন – খুবই ভাল উদ্যোগ। আমরা চাই আরও বেশি করে সংস্থাগুলো পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এগিয়ে আসুক। জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।

অন্যদিকে খাদি উন্নয়ন সমিতির প্রাণপুরুষ নজরুল সাহেব বললেন – ভবিষ্যত প্রজন্মের হাতে একটা দূষণমুক্ত পরিবেশ তুলে দেওয়ার জন্য আমাদের এই প্রয়াস। আশাকরি যাদের হাতে চারাগাছ তুলে দিয়েছি তাদের অভিভাবকরা সেগুলির যত্ন নেবে। তিনি আরও বললেন – আগষ্ট মাসের শেষের দিক থেকে তাদের প্রথম দফার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় দফার কর্মসূচি শুরু হবে। আমাদের লক্ষ্য সমগ্র পূর্ব বর্ধমান জেলাকে সবুজ দিয়ে ঘিরে ফেলা। এরজন্য অবশ্যই এলাকার বাসিন্দাদের সহযোগিতা দরকার।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments