eaibanglai
Homeএই বাংলায়ভস্মে দাঁড়িয়ে এম এ এম সি'র জন্য নতুন সার্ভের ভাবনা এডিডিএ'র

ভস্মে দাঁড়িয়ে এম এ এম সি’র জন্য নতুন সার্ভের ভাবনা এডিডিএ’র

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুর: এ ডি ডি এ’ র আগুনে খেয়েছে গোটা এম এ এম সি কলোনি! সেখানকার বাসিন্দাদের কোন নথি আর অবশিষ্টই নেই রাজ্য সরকারি সংস্থাটির হাতে। তাই, বন্ধ এম এ এম সি কারখানার শ্রমিক আবাসনের জন্য এবার নতুন করে শুরু হবে সার্ভের কাজ।

মঙ্গলবার ভোর রাত্রে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে গোটা এডিডিএ। তাতে কপাল পুড়েছে বিশ্বকর্মা নগরে বসবাসকারী এম এ এম সি’র প্রাক্তন শ্রমিক কর্মচারীদের।

আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা (এ ডি ডি এ)র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার দুপুরে জানান, “এটা সত্যি যে কালকের বিধ্বংসী আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের টাউনশিপ সেকশনের। ওখানেই ছিল এম এ এম সি কলোনির আবাসিকদের সমস্ত নথি। তার সবটাই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”

মোট ৪৭৪ একর জুড়ে বিস্তৃত এম এ এম সি কলোনিতে ৪২৫৩ টি কোয়াটারের বেশিরভাগ জুড়ে থাকেন বন্ধ কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা। তবে, সেখানে জবরদখলকারী সংখ্যাটাও বেশ নজর কাড়ার মতো। এছাড়া রয়েছে বহু কোয়ারটারের বেআইনি সম্প্রসারণ। এসবেরই যাবতীয় নথি এডিডিএ জোগাড় করে একটি সার্ভে করে। সে সবই আর রইল না। তাপস বলেন, “আবাসিকদের প্রত্যেকের কাছেই তো নিজের নিজের কাগজ আছে। আমাদের নতুন সার্ভে হবে, পাশাপাশি তাদের কাছেও আমরা সেই কাগজের কপি চাইবো। আশাকরি খুব একটা সমস্যা হবে না।”

এম এ এম সি কলোনির ‘সিডি টাইপে’র আবাসনের এলাকা জুড়ে সম্প্রতি বালি মাফিয়া ও কয়লা মাফিয়াদের বেআইনি হস্তান্তরের মাধ্যমে কোয়াটার কেনার হিড়িক পড়েগেছে। অন্তত ১৪ টি কোয়ারটার গত দেড় বছরে এভাবে প্রাক্তন কর্মীদের কাছ থেকে ২৫ থেকে ৩৫ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে এবং সেখানে ওইসব ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ উৎপাতেরা ইতিমধ্যেই বসবাস শুরু করেছে। এখন এডিডিএ’র আগুনে কলোনির সব নথি পুড়ে খাক হয়ে যাওয়ায় ওই সব বেআইনি দখলদাররাও সুযোগ বুঝে নিজেদের নাম সরকারি ভাবে নথিভূক্ত করার উপায় পেয়ে যেতে পারে – এই আশঙ্কা দানা বাঁধছে কলোনির বাসিন্দাদের মধ্যে।

সেই ২০০১ সালে এম এ এম সি বন্ধ যাবার পর সংস্থার ২২৩৩ জন প্রাক্তন কর্মী কলোনির কোয়ার্টারে থেকে গেলে, তাদের ‘সিকিউরিটি মানি’ জমা রেখে দেয় সরকার। যার পরিমান ২০২২ সালের মার্চ অবধি ছিল ১৬৬ কোটি টাকা। সেই টাকাও সম্প্রতি ফেরত চলে যায় কলকাতা হাইকোর্টের লিকুই ডিটারের জিম্মায়। বিশ্বকর্মা নগরের ‘এম এ এম সি টাউনশিপের আবাসিক ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সম্পাদক অসীম চট্টোপাধ্যায় এ ডি ডি এর হেফাজতে থাকা তাদের জমি বাড়ীর নথি পুড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, “খুব বাজে ব্যাপার ঘটে গেল। জানিনা নতুন করে সার্ভে করে এ ডি ডি এ ঠিক কি রকমের তথ্য ভান্ডার তৈরি করতে চাইছে। সেই নতুন তথ্য ভান্ডারে বহিরাগতরা বাসিন্দা হিসেবে ঢুকে পড়ে আমাদের স্থায়ী প্রতিবেশী হয়ে যাবে না তো?” তিনি বলেন, “এডিডিএ কে সব রকম সহযোগিতা করতে অসুবিধা নেই কিন্তু ওখানে তো বারবার আগুন লেগে আর সবকিছু পুড়ে ছাই হয়। আবার যে হবে না তা কোন নিশ্চয়তা আছে?” আগুন লাগার ৩৬ ঘন্টা পর বুধবার এ ডি ডি এতে আসে পাঁচ সদস্যের একটি ফরেনসিক দল। সেই দলের প্রধান সাইন্টিফিক অফিসার ডক্টর তন্ময় ভৌমিক বলেন, “এক ঘন্টার কিছু বেশি সময় ধরে আমরা পুড়ে যাওয়া দপ্তরের ভেতর থেকে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করেছি। কলকাতায় ফিরে গিয়ে আমাদের ল্যাবটরীতে সেসবের বিশ্লেষণ করা হবে। তারপরই বোঝা যাবে এই আগুনের আসল কারণ।” তিনি আরো বলেন, “এখনো পর্যন্ত আপাতভাবে খুব আপত্তিজনক কিছু আমরা পাইনি। আরো বিশ্লেষণ প্রয়োজন।”

এদিকে এদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে পুড়ে যাওয়া ফাইলপত্র থেকে ফের নতুন করে ধোঁয়া দেখতে পাওয়া গেলে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ফের এক ঘন্টা ধরে ভস্মিভূত দপ্তরে জল চার্জ করে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। তারপরই জতুগৃহের ধ্বংসাবশেষে বেলা সাড়ে ১২ টায় ঢুকতে পারেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments