সংবাদদাতা, আসানসোল ও বাঁকুড়াঃ– বৃষ্টির দাপট অব্যাহত রাজ্য জুড়ে। উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্তও। নিম্নচাপ পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে ক্রমশ্য অগ্রসর হচ্ছ। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এই দুয়ের জোড়া ফলায় আপাতত বৃষ্টি চলবে রাজ্য জুড়ে। এদিকে এই নিম্নচাপের জেরে বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ও পশ্চিমের জেলাগুলিতে গত তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আর তার ফলে দামোদর ও কংসাবতীর জলস্তর বেড়ে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দামোদর ও বরাকর নদীর উচ্চ উপত্যকা তথা ঝাড়খণ্ড ও বাংলা সীমান্তে ধারাবাহিক ভারী বৃষ্টির কারনে সোমবারের পর মঙ্গলবারও মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জলছাড়া অব্যাহত রাখেছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। যদিও এদিন মাইথন জলাধার থেকেই জল ছাড়ার পরিমান কম করা হয়েছে তবে পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমান বেড়েছে। এদিন পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অন্যদিকে মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমান কমে ৩৫ হাজার কিউসেক করা হয়েছে। এদিকে পরপর দুইদিন এত বেশি পরিমান জল ছাড়ার ফলে দামোদরের নিম্ন উপত্যকার কোনো কোনো অঞ্চলে প্লাবনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ।
অন্যদিকে নিম্ন চাপের টানা বৃষ্টিতে দামোদরের পাশাপাশি কংসাবতীর নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বাঁকুড়ার মুকুটমনিপুর জলাধার থেকেও জল ছাড়া হয়েছে। সোমবার কংসাবতী জলাধার থেকে ৫,২২২ কিউসেক জল ছাড়া হয়। এছাড়াও লেফট ব্যাঙ্ক ফিডার ক্যানাল দিয়ে ৩,৪৭৯ এবং রাইট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল দিয়ে ৯৯৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়। বৃষ্টির পরিমান দেখে দফায় দফায় জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছে কংসাবতী কর্তৃপক্ষের।
প্রসঙ্গত কংসাবতীর সেচ দপ্তরের মুকুটমনিপুর জলাধারে জল ধারণ ক্ষমতা ৪৩৪ ফিট, এর মধ্যেই দুই দিনের টানা বর্ষণে ৪৩২.২৫ ফিট জল ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে গেছে। এদিকে আগামী ২৪ ঘন্টায় আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে হাওয়া অফিস। সেই কথা মাথায় রেখে আগেভাগেই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংসাবতী কর্তৃপক্ষ। আর এই জল ছাড়ার ফলে কংসাবতীর নিম্ন অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর কিছু অংশ হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।