eaibanglai
Homeএই বাংলায়জয় জগন্নাথের জগন্নাথ চরিত্র করতে গিয়ে কী অনুভূতি হয়েছিল অভিনেতা বিপুল পাত্রের...

জয় জগন্নাথের জগন্নাথ চরিত্র করতে গিয়ে কী অনুভূতি হয়েছিল অভিনেতা বিপুল পাত্রের ?

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী, তারকেশ্বর:-

মোহমায়া ধারাবাহিকের ঋষি হোক,অথবা জয় জগন্নাথ ধারাবাহিকের জগন্নাথ, শ্রীকৃষ্ণ-সব চরিত্রেই নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকের মন ছুঁয়ে গিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা বিপুল পাত্র। বর্তমানে কালার্স বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ফেরারি মনের নায়ক অগ্নির চরিত্রটি করছেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি মুখ খুললেন ‘এই বাংলায়’ সাংবাদিক সঙ্গীতা চ্যাটার্জীর কাছে।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: সাহানা দত্তের প্রথম সিরিজ মোহমায়াতে ঋষি চরিত্রটা করতে গিয়ে আপনি টানা ৩৪ দিন অন্তরালে ছিলেন, এরপর এই চরিত্র থেকে বেরিয়ে যখন জয় জগন্নাথ চরিত্রের জন্য অফার আসে, তখন কীভাবে নিজেকে প্রিপেয়ার করলেন?

বিপুল পাত্র: আলাদা করে প্রিপারেশন বলতে আমি বরাবরই খুব মেথড অভিনয়ে বিশ্বাস করি, আমার অভিনয়ের শুরুটা হচ্ছে অরিন্দম গাঙ্গুলীর চার্বাক নাট্যদল থেকেই, তো সেখান থেকেই আমার অভিনয় শেখার শুরু হয়, সেখানে আমার মনে হয় একটি চরিত্রে ঢোকা এবং সেই চরিত্র থেকে বেরোনো বিষয়টা অনেকটাই বেশি কঠিন,অনেক বেশি যন্ত্রণার। আমি যখন সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার করছিলাম, সেই চরিত্রে ঢোকাটা যতটা কঠিন সেখান থেকে বেরোনোর পথটা ততটাই কঠিন তার একটা আলাদা প্রসেস থাকে যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় আমাদেরকে। তার জন্য আলাদা প্র্যাকটিস থাকে, তাই সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার থেকে যখন জগন্নাথের মত একটা চরিত্র করতে হয় তখন এক দেবতার যেরকম কথা বার্তা, চলা ফেরা হওয়া উচিত, সেটার জন্য আমাকে চার্বাক নাট্যদলে আমার গুরু অরিন্দম গাঙ্গুলীর সাহায্য নিতে হয়েছে,এছাড়া প্রত্যেকটা অভিনেতার তো নিজস্ব একটা শ্যাডো থাকে সেই ব্যাপারটাও কাজ করেছে।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: যে কোনো সাইকোলজিক্যাল চরিত্র করতে গেলে অভিনেতার একটা প্রচন্ড মানসিক কষ্ট হয়, অভিনেতার অনেক রকম অভিজ্ঞতা তৈরি হয়, ঋষি চরিত্র করতে গিয়ে সেরকম কোন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন কি আপনি হয়েছেন? যা কখনো কোন ইন্টারভিউতে বলেন নি

বিপুল পাত্র: হ্যাঁ মোহমায়া করার সময় এটা হয়ে ছিলো। জগন্নাথ করার সময় মনে হয়ে ছিলো যেহেতু কৃষ্ণের মত লার্জার দ্যান লাইফ একটা চরিত্র আমি করেছি, তো বারবার আমার মনে হতো, আমি পাপ করছি, আমি পাপ করছি। সর্ববিশ্বের অধিকারী সেই ভগবানের চরিত্র আমি ধারণ করছি,সেই কারণে আমার মনে হতো আমি পাপ করছি,তাই পুরো প্রজেক্টটা করার সময় আমি নিরামিষ খেতাম আর ডায়লগ বলার আগে আমি মনে মনে বলতাম,“হে ভগবান কৃষ্ণ, তুমি আমায় ক্ষমা করে দাও” তারপর আমি ডায়লগটা শুরু করতাম আর যারা মেথড অভিনয় করে তারা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে যায় তবে সেই এফেক্টটা অনেক বেশি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে পড়েছিল। কারণ জগন্নাথ তো আসলে ঠাকুরের চরিত্র একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার করতে গিয়ে যে মানসিক এফেক্ট পরে, সেটা ঠাকুরের চরিত্র গেলে পড়ে না। তাই মোহমায়া করতে গিয়ে আমি অসুস্থতা বোধ করেছি, চরিত্র করে এসে আমি শুয়ে থাকতাম, আমি স্বপ্ন দেখতাম এবং স্বপ্নে আমি অনেক সময় উঠে পড়েছি,এমনকি আমি মাঝে আমার দাদার ওপর অ্যাটাক করে ফেলেছি,এটা হয়েছে আমার সাথে।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: আর একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করেছিলাম সেটা হলো ঋষির হাসির মধ্যে একটা নিষ্ঠুরতা আছে আর ভগবান জগন্নাথের হাসির মধ্যে একটা আলাদা মাধুর্য্য ছড়িয়ে আছে,যা সব প্রশ্নের উত্তর দেয়- এই যে দুটো হাসির মধ্যে পার্থক্যটা এটা কি সম্পূর্ণ নিজের অনুভূতি থেকে করেছিলেন? নাকি এক্ষেত্রেও আপনার নাট্য জগতের গুরুদের সহযোগিতা পেয়েছিলেন?

বিপুল পাত্র:না, এটা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব অনুভূতি।আমি একটা জিনিস না মন থেকে বিশ্বাস করি, মন থেকে কোন জিনিস করলে সেটা মনে পৌঁছোয়, নিজের স্বল্প অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি যেটুকু বুঝি আমি যদি নিজেকে নিজে কনভিন্স করতে পারি যে আমি কী কারনে হাসছি, এটা যদি আমার কাছে ক্লিয়ার থাকে তাহলে সামনে যে মানুষ যিনি আমাকে দেখছেন তিনিও সেটা বুঝতে পারবেন আর সেটা যদি আমি মন থেকে করার চেষ্টা করি,তাহলে সেটা মনে পৌঁছোবে- এই নীতিতে আমি বিশ্বাস করি, আজও করি, আগামী দিনেও করবো।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: অরিন্দম গাঙ্গুলী তো আপনার গুরু, ফেরারি মনে তাকেই বাবা হিসেবে পেয়েছেন, তো এই অভিজ্ঞতাটা আপনার কেমন ছিলো?

বিপুল পাত্র: দেখুন আমি এতবার করে অরিন্দম গাঙ্গুলী বা খেয়ালি দোস্তিদারের নামটা নিচ্ছি তার কারণ আমার জীবনে এই দুজন মানুষের ভূমিকা অনস্বীকার্য, আজ কলকাতার বুকে বিপুল পাত্র কে যে কজন মানুষ চেনে,সেটা কিন্তু শুধুমাত্র ওনাদের দয়ায়। কারণ ওনারা প্রায় দেড় বছর আমাকে মাথার ওপর ছাদ দিয়েছেন, আমাকে খেতে দিয়েছেন, আমাকে ওনাদের বাড়িতে রেখেছেন। আমি মনে করি আজ যে কটা মানুষ আমাকে চেনে, তার পিছনে রয়েছে ওনাদের আশীর্বাদ, আমার বাবা-মার আশীর্বাদ আর নিজের চেষ্টা। আমি সব সময় মনে করি, বিপদের সময় যারা আমাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়, তারা ঈশ্বর। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে অরিন্দম গাঙ্গুলীকে আমি আমার বাবা হিসেবে পেয়েছি- এটা আমার কাছে একটা সৌভাগ্য,এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে না, এটা বোধহয় উপর থেকেই ঠিক ছিলো।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী:মোহমায়ার ঋষি ,জগন্নাথ,অগ্নি- এই যে একটা নেগেটিভ, একটা পজেটিভ, একটা গ্রে শেডে- আপনি অভিনয় করছেন অর্থাৎ চরিত্রের মধ্যে এই যে ডিফারেন্ট গুলো আছে- এগুলো কি আপনি সিলেক্ট করছেন না এরকম ভাবে অফার গুলো আপনার কাছে আসছে?

বিপুল পাত্র: থ্যাংক ইউ এত ভালো একটা প্রশ্ন করার জন্য। থ্যাংক ইউ সো মাচ। কিন্তু এটা সত্যি কথা বলতে আমি চুজ করছি না, এরকম ভাবেই অফার গুলো আমার কাছে এসেছে। সে ক্ষেত্রে বলতে হবে আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান যে, এই যে তিনটে প্রজেক্ট আমার কাছে এসেছে তিনটি একদম আলাদা,সেটা আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি এবং দর্শকরা সেটাকে এপ্রিসিয়েট করেছে এবং ভালোবেসেছেন-এর থেকে বড় কিছু হয় না।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: এটা তো সত্যিই একটা বিশাল ব্যাপার!তাহলে বলতে হয়, আপনি টাইপকাস্ট হয়ে পড়ছেন না!

বিপুল পাত্র: নাহ। আমার ক্ষেত্রে পরপর এক‌ই টাইপের চরিত্র এখনো অবধি আসে নি, জানি না ভবিষ্যতে কী হবে।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী:আপনার অভিনীত তিনটি চরিত্রের মধ্যে কোন চরিত্রটা সবথেকে বেশি কঠিন বলে আপনার মনে হয়?

বিপুল পাত্র: সেটা অবশ্যই মোহমায়ার ঋষি। এত শেড ওই চরিত্রটাতে,একটা দুটো তো শেড নয়,প্রায় ১৪-১৫-১৬ টা শেড,ঐ চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং, শারীরিক মানসিক সব দিক থেকেই ওই চরিত্রটা ভীষণ কঠিন এবং ওই চরিত্র করার এক্সপেরিয়েন্স অদ্ভুত,তারপর এতগুলো গুণী শিল্পী, স্বস্তিকা মুখার্জী অনন্যা চট্টোপাধ্যায় ভারতবর্ষের দুজন গুণী শিল্পী তাদের সাথে দাঁড়িয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা,তারপর সাহানা দি, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের মত মানুষ আমাকে জায়গা করে দিয়েছেন চরিত্রটা করার আমার মনে হয়েছে চরিত্রটা যথেষ্ট শক্ত ছিল।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: ওম নমঃ শিবায় এর কার্তিক চরিত্রের আগে কি অন্য কোন চরিত্র করেছেন?

বিপুল পাত্র: আমি শুরু করেছিলাম একটা টুরিস্ট গাইডের ছোট্ট চরিত্র দিয়ে,ওটা জিতে ছিলো রাঙিয়ে দিয়ে যাও ধারাবাহিকে, এরপর ওম নম শিবায়, তারপর কপালকুণ্ডলা,তারপর মোহমায়া…

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আর শ্রী জগন্নাথ- দুই চরিত্রের‌ মধ্যেও ডিফারেন্ট আছে, সেক্ষেত্রে কীভাবে প্রিপায়ার হয়েছিলেন?

বিপুল পাত্র:দেখুন এক্ষেত্রে পড়াশোনাটা করে ছিলাম, আর পরিবেশ থেকে ও আমরা এই দুই ভগবানের সম্পর্কে অনেক কিছু শিখি,যেমন একটা জ্ঞান তো আমাদের ছোট থেকেই রয়েছে জগন্নাথ চরিত্রটা ভীষণ শান্ত আর কৃষ্ণ ততোটাই নটখট, আর ভগবান মানেই তো একটা নিত্যদিনের চরিত্র। এখানে আমার মনের মধ্যে একটা জিনিস কাজ করেছিলো যে, একটু যদি এদিক থেকে ওদিক হয়, তাহলে কিন্তু মানুষের ইমোশনের ওপর আঘাত আসবে এবং মানুষ প্রশ্ন তুলবে, তো সেক্ষেত্রে একটা প্রেশার সবসময় থাকতো।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: মানুষ কোন চরিত্রের জন্য আপনাকে বেশি চেনে?

বিপুল পাত্র: ঋষি,জগন্নাথ সব চরিত্রের জন্যই চেনে, এখন অগ্নি করছি, অগ্নির জন্য ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। যখন ধরুন আমি জগন্নাথ করতে সেটে আসতাম তখন সবাই ভাবতো আমি বোধহয় ঋষি, ওই রকম ধরনেরই ছেলে , অনেকেই আমার সাথে তখন কথা বলে নি তারপর যখন অগ্নি করতে এলাম তখন সবাই জগন্নাথ জগন্নাথ করতো এমনটাই হয়।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: দীর্ঘ অভিনয় জীবনের মধ্যে তিক্ত কোনো অভিজ্ঞতা আছে?

বিপুল পাত্র: দীর্ঘ অভিনয় জীবন নয় আমার, একদমই স্বল্প অভিনয় জীবন। না, তিক্ত কোন অভিজ্ঞতা আমার নেই। এখন দেখুন নিজের বাড়িতে থাকতে গেলেও পরিবারের মানুষের সাথে রাগ হয়, ঝগড়া হয়, হাসি হয় কান্না হয় তো অভিনয়ের ক্ষেত্রেও আমার তাই মনে হয়, কেউ যদি দুটো বকুনি দেয়, আমার মনে হয়, সেটা ঠিক ঠিক তিক্ত অভিজ্ঞতা নয়, আমার অভিনয়ের জার্নির‌ই একটা অঙ্গ।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ সবসময় চান, ছেলে একটা দশটা-পাঁচটার চাকরি করুক, সেক্ষেত্রে আপনি বললেন,আপনার পরিবারে‌ও নাটক বা থিয়েটারের কেউই ছিল না,তো অভিনয় করবেন বলে যখন ভাবলেন,পরিবার থেকে বাধা পান নি?

বিপুল পাত্র: দেখুন যেমনটা আপনি বললেন,মধ্যবিত্ত পরিবার, যারা এই প্রফেশনের সাথে যুক্ত নয়, তারা কি হয় স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়। কোথাও গিয়ে তারা ভয় পায় আমার সন্তানটা হারিয়ে যাবে না তো, তারা কিন্তু সাফল্যকে ভয় পায় না,তারা ব্যর্থতাকে ভয় পায়। তারা চায় আমাদের সন্তান সাফল্য পাক,তো সেই জায়গা থেকে বাধা তো একটা ছিলোই।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: পরিবার বা আত্মীয়স্বজন বা চেনা পরিচিতের মধ্যে আপনার কোন কাজটা সবথেকে বেশি প্রশংসিত হয়েছিলো বা কাছের মানুষরা আপনার কোন কাজটাকে বেশি অনুভব করেছিলেন মোহমায়া না জগন্নাথ ?

বিপুল পাত্র: জয় জগন্নাথটা ভীষণভাবে ফিল করতে পেরেছিলো।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: অনন্যা চট্টোপাধ্যায় ও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে কী বলবেন?

বিপুল পাত্র:ঐ দুজন মানুষের সাপোর্ট না থাকলে ঋষি চরিত্রটাই হয়ে উঠতো না। ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম দুজন সেরা দুজন অভিনেত্রীর মাঝে সাহানা দি আমাকে জায়গা করে দিয়েছিলো, আমার কাছে মনে হয়েছিল যেন স্বপ্ন।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: ভূতের রাজা যদি‌ বর দেয়, আপনার চরিত্র আপনি নির্বাচন করতে পারবেন সে ক্ষেত্রে আপনি কী চরিত্র করবেন?

বিপুল পাত্র: দেখুন আমার মনে হয় ভূতের রাজা যদি আমাকে বর দেয় তবুও আমি নির্মাতাদের ওপরই ব্যাপারটা ছেড়ে দেবো কারণ একমাত্র নির্মাতারাই বুঝতে পারবেন কোন চরিত্রে আমাকে ভালো মানাবে।

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী: তবু মানুষের তো ড্রিম ক্যারেক্টার বলে অনেক কিছু থাকে, আপনার স্বপ্নের তেমন কোনো চরিত্র নেই? যেটা করতে চান আপনি!

বিপুল পাত্র: সেক্ষেত্রে বলবো ‘ফেলুদা’। কারণ সব্যসাচী দাকে আমি বহুদিন ধরে দেখেছি কাছ থেকে, একই নাট্য দলে একসাথে থেকেছি, তাই সেখান থেকে কিছুটা হলেও ইন্সপায়ার সেক্ষেত্রে আমি ফেলুদাই করতে চাইবো।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments