মনোজ সিংহ:- এসে গেল কালীপুজো। আমার এই তীর্থযাত্রা পথে উত্তরকাশীর একটি বাঁকে এসে থমকে গেছিল গোটা দেশ, ঠিক একটি বছর আগেই এমনি একটি কালীপুজোর দিনে। সারা দেশের কোটি কোটি উদ্বিগ্ন চোখ একটি সুড়ঙ্গ মুখে আটকে গিয়েছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ওই সুড়ঙ্গের ভেতরে যে আটকা পড়েছিলেন ৪১ জন খননকর্মী। তারা পাহাড় ফুটো করে তীর্থযাত্রীদের সুরাহা দেওয়ার জন্যই ওই সুড়ঙ্গ কাটছিলেন। টানা ১৭ দিন আটকা থাকার পর মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের যে বীর যোদ্ধারা জীবনের বাজী রেখে উদ্ধার করে এনেছিলেন, আমার শহরই প্রথম সেই মজুরদের সম্মানিত করেছিল। মজুরের ঘামে ভেজা দুর্গাপুরের সেই পবিত্র মাটি থেকেই আমি এসেছি, চলেছি তীর্থপথে। গোটা শরীরে অদ্ভুত রোমাঞ্চ অনুভব করলাম। ওই ‘ধারাসু বেন্ড ‘ ছুঁয়েই আমি পৌঁছব মা গোঙ্গোত্রীর কোলে!
অমৃত কুম্ভের সন্ধানে এসে শ্রী শ্রী যমুনোত্রী দেবীর চৌকাঠে আমার সকল পাপ পূণ্যের ভার নামিয়ে দিয়ে এবার চলেছি মা গঙ্গার উৎসমুখ গঙ্গোত্রীর পথে। গোবলয়ে অতীত ভারতের শিষ্টাচার, সার্বভৌমত্বকে একযোগে ‘গঙ্গা যমুনা তেহজীব’ বলা হয়। নদীমাতৃক এই দেশের শীর্ষ দুই প্রধান নদীই গঙ্গা-যমুনা। শাস্ত্রের ছত্রে ছত্রে এই দুই নদী দেবীমাতার সম্মানে ভূষিত। আমাদের জীবনের শিরা ধমনীতে অনন্তকাল ধরে বইছে যাদের অনাবিল স্রোত। বহমান এই স্রোতের অমৃতধারা সমানে বইবে আমার সন্তান ওমনিলের অলিন্দে, নিলয়ে, বিশ্বাস আছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৩০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেও মালুম হলো – চাঁদ বহু দূরে, আমি যে নিছক বামন! আমার অশান্ত মনের অতৃপ্ত আত্মাকে পাহাড়ের এই উচ্চতায় এনেও বাগে আনতে পারিনি। তাই, একগুচ্ছ প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে এবার পাড়ি দিলাম শ্রী শ্রী গঙ্গোত্রী ধামের উদ্দেশ্যে।
শ্রী শ্রী যমুনোত্রী ধামের এক কিলোমিটার আগে গাঢ়ওয়ালী গেস্ট হাউস থেকে খুব ভোরে শুরু হল আমাদের যাত্রা। কয়েক কিলোমিটার আমাদের গাড়ি এগিয়ে চলার পরই হঠাৎ নজরে এলো পাহাড়ি রাস্তার পাশে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অগুন্তি সব নানা রঙের, নানান ঢঙের যানবাহন। আমাদের গাড়িও যথারীতি দাঁড়িয়ে পড়ল সেই অবিরাম সারির একেবারে পেছনে। ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে খবর নিয়ে জানতে পারলো – গতকাল রাত্রে অবিরাম বৃষ্টির ফলে হনুমান চাট্টির কাছে বিশাল আকারের একটি ধস নেমেছে পাহাড় থেকে। গত রাত থেকেই উত্তরাখণ্ডের পি ডাবলু ডি কে সাথে নিয়ে বিপর্যয় মোকাবেলা দলের কর্মীরা দ্রুত মাটি সরানোর জেসিবি মেশিন দিয়ে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করছে। কোন বিকল্প না থাকায় অপেক্ষা করতে বাধ্য আমরা সবাই। গাড়ি থেকে নেমে এক পেয়ালা চায়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়লাম পাহাড়ী রাস্তায়। প্রায় ৩০০ মিটার যেতেই নজরে এলো এক পাহাড়ি ছোট্ট চায়ের দোকান। তবে, পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের ভিড়ের ঠেলায় সেই ছোট্ট চায়ের দোকানটিতে তখন লোকারণ্যে। ভিড় ঠেলে মুখ বাড়িয়ে এক কাপ চায়ের আবদার করতেই উত্তর এল “লাইন মে খাড়া হো যাইয়ে, চাই বান রাহাহে,” অর্থ হল- লাইনে দাঁড়াতে হবে চা তৈরি হচ্ছে। অবশেষে এক পেয়ালা গরম গরম চা পেয়ে সকালের ক্লান্তি টা কিছুটা হলেও দূর হলো।
ঘন্টা কয়েক অপেক্ষা করার পর অবশেষে উন্মুক্ত হলো ধস কবলিত রাস্তাটি। মন্থর গতিতে শুরু হল আমাদের যাত্রা। আঁকা-বাঁকা, চড়াই উতরাই পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে আমাদের গাড়ি ছুটে চলল ‘ধারাসু বেন্ড’ নামক ইদানিং কালের বহুল চর্চিত রোমহর্ষক সেই বাঁকের দিশায়।
পথে যেতে যেতে আমাদের ড্রাইভার হঠাৎই একটি সুড়ঙ্গের মুখের সামনে গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে আঙুল দিয়ে ইশারায় বলল, “আর কয়েক মাস পরেই এই সুড়ঙ্গ দিয়ে সোজা ‘ধারাসু বেন্ড’র কাছাকাছি যাওয়া যাবে। কমে যাবে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার রাস্তার যাত্রাপথ।” কেন্দ্রীয় মোদি সরকারের বহুল কাঙ্ক্ষিত প্রকল্প এই কেদারনাথ-বদ্রিনাথ চার ধাম যাত্রা করিডোর। সুড়ঙ্গটি ১৩৪ জাতীয় সড়কের যমুনোত্রী প্রান্তে অবস্থিত, যাতে দক্ষিণ প্রান্তে ধারাসু ও উত্তর প্রান্তে যমুনোত্রীর সাথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। টানেলটি ৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। গাড়ির ড্রাইভার সুগ্রিব জানালো, “কুড়ি কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার পর তিন তিনটি পাহাড় ভেদ করে এই সুড়ঙ্গের মুখের সামনে রাস্তাটি দিয়েই আমরা এবার যাব।” আমরা যেন ওই সুড়ঙ্গটির ছবি তুলে নিতে পারি – এমন আনুরোধ করে রাখলাম ড্রাইভারের কাছে। অবশেষে ঘন্টা তিন পর সেই সুড়ঙ্গের মুখের সামনে আমাদের গাড়ি এসে দাঁড়ালো। তবে, স্থানীয় পুলিশের টহলদারি গাড়ি আমাদের পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিল ওই সুড়ঙ্গ একশ মিটার দূর থেকে দেখেই আমাদের চলে যেতে হবে। বিপজ্জনক ওই সুড়ঙ্গের সামনে যাওয়ার কোনো অনুমতি নেই। তাই, কোন বিকল্প না থাকায় দূর থেকেই ছবি তুলে এগিয়ে যেতে হলো আমাদের। দুধের স্বাদ ঘোলেই মিটলো যা হোক করে! এই সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জনের মধ্যে একজন ছিলেন আমার বাংলার মজুর মানিক তালুকদার। বাংলার কোচবিহারে তার নিবাস। তাদের উদ্ধার করেছিলেন দিল্লি, উত্তর প্রদেশের দিনমজুর ‘র্যাট হোল’ শ্রমিক মুন্না কুরেশী, ভাকিল হাসান ও তাদের সাথীরা। দেশের তাবড় তাবড় বিশেষজ্ঞ, ইঞ্জিনিয়ার তো দুর, সুদুর অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা সুড়ঙ্গ বিশারদও যখন পর্যুদস্ত, তখন কাজের কাজটি করলেন সকলের নিচু চোখে দেখা এই ‘র্যাট হোল’ মজুরেরাই। আমার দেশ কিন্তু তাদের যোগ্য সম্মান দেয়নি। দিয়েছিল আমার শহর দুর্গাপুর। সেখানে ‘শ্রমিক মিলনোৎসব -২০২৩’ তে বামপন্থী নেতৃবৃন্দ এদের মঞ্চে তুলে দিয়েছিলেন বীরের মর্যাদা। ভেবে গর্বে বুকটা ভরে ওঠে, এই হাড় কাঁপানো ঠান্ডাতেও। বামনেতা সৌরভ দত্ত এখনো মুন্না, ভাকিলদের বীর গাথার কথা স্মরণ করেন সম্মানের সাথে। এখানকার এই পাহাড়ের সুগ্রিবেরা সেকথা জানেনা। সেদিন দুর্গাপুর শিল্প শহরে এক বিশাল মোটরসাইকেল র্যালি করে তাদেরকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। শ্রমিকের শহর দুর্গাপুর ওই অবহেলিত শ্রমিকদের বুকে জড়িয়ে ধরে তাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দিয়ে। শিল্পাঞ্চলের প্রতিটি মানুষই কুর্নিশ জানায় ওই উদ্ধারকারী দলের সমস্ত সদস্যদেরকে। কিন্তু, এখানেই দুঃখের শেষ নয়। খেটে খাওয়া শ্রমিকের কপালে যে দুর্ভোগ আছে তা আবারও প্রমাণ হলো অল্পদিনেই। যাদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিল, সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের উদ্ধারকারী দলের প্রধান ভাকিল হাসানের বাড়ি বুলডোজারে নির্মম আঘাতে গুঁড়িয়ে দেয় দিল্লি উন্নয়ন পর্ষদ।
যে উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা উদ্ধারের জন্য আগে কোন ব্ল্যাকমেলিং করেননি, শর্ত রাখেননি, তাদের ঘাম, রক্ত জল করা পরিশ্রমে উদ্ধার পাওয়া শ্রমিকদের যে ১ লাখ টাকা করে পুরষ্কার দেওয়া হয়েছিল সেটুকুও উদ্ধারকারী মজুরদের দেওয়া হয়নি। মাত্র ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব হলে, ওঁরা সকলেই তা প্রত্যাখ্যান করেন। ওঁরা প্রমাণ করেছেন যে ওঁরা লোভী- ব্ল্যাকমেইলার নন। ওঁরা অধিকারবোধ থাকা আত্মমর্যাদা সম্পন্ন শ্রমিক। এই প্রত্যাখ্যানের বদলাতেই বোধহয় গুঁড়িয়ে দেয়া হয় ভাকিলের দিল্লির ওই বাড়ি! ভাবি – এই আত্মমর্যাদা বোধই কী ওদের “কাল” হলো?
যাঁদের কোন উচিৎ ছিলো বাড়ি করে দেওয়া, তাঁদের টিম লিডারের নিজের রক্ত-ঘামে তৈরি ১২ বছরের পুরোনো বাড়ি ডি ডি এ সকাল ৯ টায় নোটিশ ধরিয়ে সেদিনই ভেঙে দিলো! সারারাত ওরা ভাঙাবাড়ির সামনেই বসে ছিলো। সেইদিন ভাকিল হাসানের- গলায় স্পষ্ট কান্না ছিল, জানলাম যে এক সারি বাড়ির মধ্যে থেকে মাঝখানের বাড়িটি (ভাকিলের) টার্গেট করেই ভাঙা হয়েছে! বললো, “আপনারা আমাদের মঞ্চে তুলেছিলেন আর এরা আমার বাচ্চাদের এই রাত্রে খোলা আকাশের নিচে দাঁড় করিয়ে দিলো!” পুরাণের “রামলালা” বিশাল ঘর পায় এই দেশে, জীবন বিপন্ন করে দেশ গড়ার কারিগর ভাকিলরা বে’ঘর হয়! বড়ো উদ্যোগ দরকার ওদের মাথার ওপর ছাদ ফিরিয়ে দিতে! অতটা কী করে হবে জানি না। তবে আপাতত মাথা গোঁজার ব্যবস্থার জন্য কিছু ব্যবস্থা করার উদ্যোগ সবাই মিলে নেওয়া উচিত বলে মনে হয় আমার। গরীবের পাশে দাঁড়ানোর লোক দিনদিন কমছে দেশে, তীর্থভূমিতে এসেও মালুম হয়। মন বলে – ‘হায় হাসান!’ এ যেনো আরেক মহরমের হা-হুতাশ!!
ওই সুড়ঙ্গটিকে বলে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ। ঠিক কি হয়েছিল গত বছর ১২ নভেম্বরের সেই অভিশপ্ত দীপাবলীর দিনে?
দীপাবলির সকালে আনুমানিক ভোর ৫ টায়, উত্তরাখণ্ডের চারধাম পথে নির্মাণাধীন সিল্কিয়ারা টানেলের একটি অংশ আচমকাই ধসে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে সিল্কিয়ারা সুরঙ্গের মুখ থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে দক্ষিণ প্রান্তে ‘ধারাসু বেন্ড’র কাছাকাছি। যেখানে ৪১ জন সুড়ঙ্গ শ্রমিক কাজ করছিলেন। যদিও ধসের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো পর্যন্ত তদন্তাধীন। উদ্ধার অভিযানের কাহিনীতে অসংখ্য প্রশংসনীয় দিক ছিল।
ওই দুর্ভাগ্যজনক দিনে, সুড়ঙ্গ শ্রমিকদের বেঁচে থাকার সমস্ত আশা হারিয়ে গেছে বলে মনে হয়েছিল। সাইট টিম যখন এই ট্র্যাজেডির জন্য শোক প্রকাশ করেছিল, তখন বেঁচে থাকার জন্য জলের পাইপলাইন থেকে হঠাৎ করে জলের স্রোত বেরিয়েছিল। যা অলৌকিকভাবে ধসে পড়া পাথরের ধ্বংসাবশেষ দ্বারা অস্পৃশ্য ছিল। পাইপলাইনের বিপরীত দিকের লোকেরা অক্ষত ছিলেন এবং জলের পাম্প ব্যবহার করে সংকেত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। দ্রুত, সাইট টিম একটি পুরানো পদ্ধতি নিযুক্ত করে, অন্য প্রান্তে থাকা লোকদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি ফাঁপা পাইপ ব্যবহার করা হয়। উদ্ধারকারী দল আবিষ্কার করে যে ৪১ জন শ্রমিকই অলৌকিকভাবে নিরাপদে আছেন। ধসে পড়া অঞ্চল থেকে দূরে সরে গেছেন তারা সবাই। তারা জীবিত ছিলেন এবং তারা প্রায় ২ কিমি সুড়ঙ্গে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন। যার বেশিরভাগই একটি পুরু কংক্রিটের আস্তরণ দ্বারা সুরক্ষিত ছিল।
উদ্ধার কাজ শুরু করে ছোট জলের পাইপটি দিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের শুকনো ফল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। সৌভাগ্যবশত, একটি ভারী সাঁজোয়া বৈদ্যুতিক তারের সৌজন্যে তাদের বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয় । পরবর্তীকালে, একটি শক্তিশালী আমেরিকান ওগার পাইপ জ্যাকিং মেশিন আনা হয় দ্রুত উদ্ধারের জন্য। দীর্ঘ চেষ্টার পরেও ওই বিদেশি মেশিন দিয়েও উদ্ধারকাজ সম্ভব হয়নি। দেবভূমির উদ্ধারকারী দলের কাছে এটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। উদ্ধার অভিযানের পরামর্শ দিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। শ্রমিকদের নিরাপদ উদ্ধার নিশ্চিত করার জন্য দেশ জুড়ে বেশ কিছু মেশিন, সংস্থান এবং বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ধসে পড়া সিল্কিয়ারা-বারকোটের সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করার জন্য ৬০ মিটার পর্বত খনন করতে গিয়েও শেষে বিপত্তি দেখা দেয়। তখন ধ্বংসাবশেষ খননের জন্য উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি ও দিল্লি থেকে সাতজন ইঁদুর-গর্ত খনির ( র্যাট হোল মাইনার) দলটি আনা হয়েছিল। ম্যানুয়াল প্রচেষ্টা শুরু করা হয়। তারা ধ্বংসস্তূপ অপসারণের জন্য হাতে ধরা ড্রিলিং মেশিন এবং লোহার প্রতিবন্ধকতা কাটাতে গ্যাস কাটার ব্যবহার করেছিলেন। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে, তারা ১০ মিটারের বেশি খনন করেছিলেন আটক মজুর ভাইদের প্রাণ বাঁচাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। ওই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে একটি পাইপ তারা ঠেলে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। খনি শ্রমিকরা পাইপটি পুশ করার জন্য স্থান তৈরিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আটকে পড়া শ্রমিকরা প্রস্তুতই ছিলেন এবং কেউ কেউ হামাগুড়ি দিয়ে চলে যান পাইপের ভেতর দিয়ে। শেষে ২৮ শে নভেম্বর বিকেলের মধ্যে, তাদের ছোট সরঞ্জাম ব্যবহার করে, তারা সফল ভাবে অবশিষ্ট ১০ মিটার গর্তও খনন করেন। সেদিন সন্ধ্যায় টানেলের ভেতরে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে সফলভাবে উদ্ধার করা হয়। আটকে পড়া সমস্ত খনি শ্রমিককে কয়েক ঘন্টার মধ্যে নিরাপদে বের করা হয়, ১৭ দিনের দীর্ঘ অগ্নিপরীক্ষার সমাপ্তি হয়।
আমার অমৃত কুম্ভের সন্ধানে পথে বেরিয়ে আবারো সেই অভিশপ্ত দীপাবলীর দিনের কথা খুব করে মনে পড়ছে। কেমন আছে সেইসব উদ্ধারকারী দলের শ্রমিকেরা কে জানে? এদিকে আমাদের যাত্রা পথের সময় প্রায় অনেকটাই গড়িয়ে এসেছে। আমরা এখন ধারাসু বেন্ডের কাছে একটি ছোট্ট জলখাবারের দোকানে দুপুরের খাবার সেরে আবার রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত শ্রী শ্রী গঙ্গোত্রী ধামের উদ্দেশ্যে। অমৃত কুম্ভের সন্ধানে!
চলবে…………