সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– পঞ্চায়েতের আসন বন্টনকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড তৃণমূলের আসানসোল জেলা কার্যালয়ে। খোদ তৃণমূল জেলা সভাপতির সামনেই হাতাহাতিতে জড়াল দলের দুপক্ষ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
ঘটনার সূত্রপাত আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার রানিগঞ্জ ব্লকের জেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন বন্টন নিয়ে। শনিবার রাতে দলীয় প্রতীক দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে আসন বন্টন নিয়ে রানিগঞ্জ গ্রামীণ এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতি দেবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দলীয় নেতাদের সামনেই বচসায় জড়িয়ে পড়ে রানিগঞ্জের গ্রামীণ অঞ্চলের আরেক তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং। অর্জুন সিং এবং তার অনুগামীরা যে আসন পেয়েছেন তা তাদের মনঃপুত হয়নি বলেই তারা জেলা সভাপতির কাছে নালিশ জানান। আর তখনই দেবনারায়ণ দাসের সঙ্গে তাদের তাদের বচসা শুরু হয় এবং ক্রমে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়। উত্তেজনায় এতটাই ছাড়ায় যে দলীয় অফিস থেকে বেরিয়ে রাহালেন মোড়ের মাথাতে দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলতে থাকে। খবর পেয়ে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ছুটে যায় এবং দুইপক্ষকে হটিয়ে দেয়।
এই ঝামেলা যখন চলছে তখন দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ঘটক ও শাহিদ পারভেজ। ঝগড়া বিবাদের মধ্য পড়ে হেনস্তার শিকার হতে হয় আসানসোলের সংখ্যালঘু তৃণমূল সেলের নেতা শাহিদ পারভেজকে। পরে নেতৃত্বরা দুই পক্ষকে শান্ত করে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেও চাপা ক্ষোভ রয়েছে বলেই খবর।
অন্যদিকে দলের দুপক্ষের সংঘাতের ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বহু মানুষ টিকিট চায়। কিন্তু আসন সীমাবদ্ধ। তাই সবাইকে টিকিট দেওয়া যায় না। ফলে কেউ ধর্না অবস্থান করছে, কেউ কান্নাকাটি করছে। আমরা সবাইকে বোঝাবো এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে আবার সবাই দলের হয়েই লড়াই করবে। দেওয়াল লিখন সম্পন্ন হয়ে গেলেই এই লড়াই থেমে যাবে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি।
উল্লেখ্য, পশ্চিম বর্ধমানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের মনোনয়ন জমা পড়েছে ১১৩৬ অর্থাৎ আসন সংখ্যা থেকে ১০৬টি বেশি। জেলায় পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ১৭২টি। তৃণমূল কংগ্রেস মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ২০১টি অর্থাৎ মোট আসন সংখ্যা থেকে বেশি ২৯টি। যদিও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের দাবি, কিছু কর্মী অতি উৎসাহিত হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র তুলে নেওয়ার যথেষ্ট সময় রয়েছে।