সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এক যুবককে কুড়ুল দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল দম্পতির বিরুদ্ধে। ঘটনা আসানসোলের বারাবনি থানা এলাকার। মৃত যুবকের নাম বাপি রুইদাসকে (২৯), বারাবনির কাপিষ্ঠ গ্রামের বাউরি পাড়ার বাসিন্দা। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মন্টু দাস ও তার স্ত্রী লক্ষী দাসকে বাপিকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যে নাগাদ মন্টু দাস ও তার স্ত্রী লক্ষী দাস বারাবনি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে এবং পেশায় দিনমজুর বাপিকে খুনের কথা জানায়। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ ওই দম্পতির বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাপি রুইদাসকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে বাপির মৃত্যুর খবর পেয়ে তার পরিজন প্রতিবেশীরা পাশের শিবমন্দির পাড়ায় দাস দম্পতির বাড়ির সামনে জড়ো হয় ও ক্ষোভ উগড়ে দেয়। যদিও তার আগেই পুলিশ ওই দম্পতির বাড়ি সিল করে দেয়। পাশাপাশি ওই বাড়ি থেকে খুনের সময় ব্য়বহৃত কুডুলটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে।
মৃত যুবকের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা এদিন বলেন, “কি কারণে খুন করা হয়েছে আমরা তা জানি না। বাপি দিন মজুরের কাজ করতো। দুপুরে একবার তার সঙ্গে স্ত্রীর কথা হয়েছিলো। তখন ও বলেছিলো, একটু পরে আসছি। তারপরে আর তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায় নি। সন্ধ্যের পরে ঘটনার কথা জানতে পারি। বাপি যে ওদের বাড়িতে যেতো, তা আমরা জানতাম না।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মৃত বাপির স্ত্রী ছাড়াও দুই সন্তান আছে। আবার অভিযুক্ত দাস দম্পতিরও তিন ছেলেমেয়ে আছে।
বুধবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যুবকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। রিপোর্টে জানা গেছে, যুবকের মাথায় গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। যা কুড়ুলের মতো ভারী কোনো জিনিস দিয়ে মারার জন্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মন্টু দাস ও তার স্ত্রী লক্ষী দাস, বাপি রুইদাসকে কুড়ুল দিয়ে খুনের কথা স্বীকার করেছে। লক্ষী দাসের সঙ্গে তিন থেকে চার বছর ধরে বাপির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিলো। পরে লক্ষীর স্বামী তা জানতে পারে। বাপিকে বাড়িতে আসতে মানা করা হয়েছিলো। কিন্তু বাপি তা না শুনে লক্ষীকে উত্যক্ত করতো। সেই কারণে বিরক্ত হয়েই মঙ্গলবার দুপুরে বাপি আবার বাড়িতে এলে, তারা এই ঘটনা ঘটায়। দুপুর দুটো থেকে আড়াইটের মধ্যে ওই ঘটনা ঘটায় তারা। এরপর তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ও সন্ধ্যে ছটা নাগাদ থানায় আত্মসমর্পণ করে। দুজনকে গ্রেফতার করা হয়ছে , ঘটনায় একটি খুনের মামলা করা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার তাদের আসানসোল আদালতে পেশ করা হবে।





