সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– ভোট ও রাজনীতির ময়দানে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও দুই বিরোধী দল বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দেখা গেলেও আসানসোলে পুরনিগমে এক নতুন নিদর্শন তৈরি করতে চলেছে শাসক ও বিরোধীরা। শাসক দলের কাউন্সিলরের দাবিকে সমর্থন করে দাবি সম্বলিত চিঠি সই করলেন বিরোধী দুই দলের কাউন্সিলর।
প্রসঙ্গত চলতি নভেম্বর মাসে আসানসোল পুরনিগমের পুর কাউন্সিলারদের মাসিক বৈঠক হতে চলেছে। সেই বৈঠকে ছয়টি বিষয়ে আলোচনা চেয়ে আসানসোলের ৪১নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রণবীর সিং ভররা ওরফে জিতু সিং সম্প্রতি পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন। আর তৃণমূল কাউন্সিলরের সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে ওই চিঠিতে সই করে আলোচনার দাবি করেছেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর গৌরব গুপ্ত ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর গোলাম সরবর।
জিতু সিং তার ছয়টি দাবির মধ্যে সম্প্রতি শহরের একটি ব্যাংকের শাখায় থাকা পুরনিগমের একাউন্ট থেকে ৪০ লক্ষ টাকা সাইবার অপরাধীদের হাতিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গ টেনে পুরনিগমের সব ব্যাংক একাউন্টের তথ্য নিয়ে মাসিক বোর্ড বৈঠকে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বিজেপি কাউন্সিলার গৌরব গুপ্ত বলেন, “এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োচিত দাবি। তার সব কটি দাবিকেই আমরা সমর্থন জানাচ্ছি। আলোচনার মাধ্যমে এইসব প্রকাশ্যে আসুক। শিখ (পাঞ্জাবি) অ্যাকাডেমির জন্য তহবিল বরাদ্দ করার দাবিও অবশ্যই সমর্থনযোগ্য।”
অন্যদিকে কংগ্রেস কাউন্সিলর গুলাম সরবর বলেন, “শাসক দলের কাউন্সিলার জিতু সিং যে প্রধান বিষয়টি আলোচনার জন্য দাবি করেছেন, সেটা আমরা বিরোধীরা বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছি। তিন বছর হয়ে গেল পুরনিগমের পিএসি বা পাবলিক একাউন্টস কমিটি তৈরি হয়নি। এই কমিটির চেয়ারম্যানও ঘোষণা করা হয়নি। এই কমিটির চেয়ারম্যানের পদ বিরোধীদের প্রাপ্য । পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটি নিয়মিত বৈঠক করলে অনেক আর্থিক দুর্নীতি ধরা পড়বে। আর্থিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে ও শৃঙ্খলা থাকবে।”
পাশাপাশি তিনি জানান, এর আগে তাপস রায় নামে এক পুর কর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় কোটি টাকার কেলেঙ্কারি অভিযোগ উঠেছিল। তাকে গ্রেফতারও করা হয়। পরে এখান থেকে তিনি চলে যান। কিন্তু সেই টাকা আজও ফেরত আসেনি। একইভাবে কুলটি বোরো অফিসের একজন কর্মী প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করেছে। ওই টাকাও পুরনিগম এখনো পায়নি। আসানসোল পুরনিগমের আওতাধীন বিভিন্ন পার্কিং থেকে আদায় করা লক্ষ লক্ষ টাকা অনেকে পুরনিগমে জমা দেয়নি। সেই টাকা আদায় করা নিয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসেনি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে শহরের রাজনৈতিক মহলে। তবে এই বিষয়ে তিন দলের জেলা নেতৃত্বর কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।