সঙ্গীতা চৌধুরী, হুগলিঃ- হুগলির আতড়ার ব্যানার্জী বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো এই বছর ২৭২ তম বর্ষে পা দিল। এই পুজোর পিছনে লুকিয়ে আছে মায়ের দৈবাদেশের অলৌকিক সত্য ঘটনা। ব্যানার্জী বাড়ির বর্তমান পুরোহিত ও চতুর্থ প্রজন্মের বড় ছেলে অক্ষয় কুমার ব্যানার্জী তাদের ব্যানার্জী বাড়ির পুজোর ইতিহাসের কথা বলেন। হেমনলিনী দেবীর পাঁচ সন্তান-বামাচরণ, সূর্যকান্ত, প্রসন্ন, হরিপদ ও আশুতোষ। লোকের জমিতে তারা দিনমজুর খাটতেন। সেই সময় আতড়ার অভয় মুখার্জীর বাড়িতেই একমাত্র আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে মা জগদ্ধাত্রী পুজো হত, সেখানেই পাঁচ ভাই পরিবেশনের কাজ করতেন ও মা হেমনলিনী দেবী ভান্ডার রক্ষিকার কাজ করতেন।
এক বছর পুজোয় এক সন্ন্যাসী আসেন ও বাইরের প্রচুর লোকসমাগম দেখে তিনি হেমনলিনী দেবীকে বলেন, মা, বাইরে অত ভিড়ে আমি খেতে পারব না, তুমি যদি আমায় এক মুঠো খেতে দাও, তাহলে আমি এখান থেকেই খেয়ে চলে যাব। হিমনলিনী দেবী তাকে অনেক করে বলেন যে এটা তার বাড়ির পুজো নয়। তিনি এখানে কাজ করতে এসেছেন কিন্তু সন্ন্যাসী ঠাকুর হেমনলিনী দেবীকে বারংবার অনুরোধ করতে থাকেন, খাবার দেওয়ার জন্য। সন্ন্যাসীর অনুরোধ শুনে হেমনলিনী দেবী একটা আসন পেতে তাকে ভাঁড়ার ঘরের কাছেই খেতে দেন। এমন সময় বাড়ির কর্তা সেখানে এসে হাজির হয় এবং সন্ন্যাসীকে জিজ্ঞেস করে জানেন তাকে কে খেতে দিয়েছে!
এরপর বাড়ির কর্তা হেমনলিনী দেবীর উদ্দেশ্য অবজ্ঞাসূচক গলায় বলেন,“ পরের ধনে পোদ্দারি করা হচ্ছে! ওই মায়ের নিজের আছে কী যে খেতে দেবে?” এই কথা শুনে হেমনলিনী দেবী কাঁদতে থাকেন, পাঁচ ভাই মায়ের অপমানের কথা শুনে পরিবেশনের কাজ থামিয়ে দেন ও বাড়ির কর্তাকে তারা বলেন, “যেখানে আমার মায়ের অপমান হয়েছে,সেখানে আমরা কেউ পরিবেশনের কাজ করব না, আপনারা কী করবেন বুঝে নিন। ”
মুখার্জীদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পুজো মন্ডপে মা জগদ্ধাত্রীর সামনে মাথা খুঁড়ে পাঁচ ভাই প্রতিজ্ঞা করেন,“মা আমরা নিজেরা যদি তোর পুজো কোনদিন করতে পারি, সেদিন থালা ধরব তার আগে নয়।”-এরপরের বছর দুর্গাপুজোর দশমীর ঠিক আগেই বামাচরণকে মা স্বপ্নাদেশ দেন পুজো করার ও মাটি তোলার। একইসাথে সেই স্বপ্নাদেশে মা বলেছিলেন মুখার্জীবাড়ির পুজো উঠে যাবে, পরবর্তীতে তাই হয়।
এমনকি কলকাতায় হরিপদ মুখার্জীর বাড়ি থেকে পুজোর বাসন আনার কথাও মা বলে দেন। সেই পুজো এইবছর পা দিল ২৭২ তম বর্ষে। এইবারও আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে মায়ের পুজো হয়, এই বছর ব্যানার্জী বাড়ির মায়ের পুজোয় চার কুমারীর পুজো হয়।
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/11/ADD-1.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/11/ADD-2.jpeg)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/11/ADD-3.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/11/ADD-4.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/11/ADD-5.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/11/ADD-6.gif)