রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জ্জী, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান -: আগমনীতেই বাজে বিদায়ের সুর। একদিনের দুর্গাপুজো আয়োজন করা হয় মহালয়ার দিনে পশ্চিম বর্ধমান জেলার হিরাপুর থানার অন্তর্গত ধেনুয়া গ্রামে। এই পুজো শুরু হয়েছিল ১৯৭৯ সালে কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুরের হাত ধরে। কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুর ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ পণ্ডিত। তিনি ছিলেন একজন ধার্মিক মানুষ এবং তিনি গ্রামের উন্নতির জন্য কাজ করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে দুর্গাপুজো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং এটি গ্রামবাসীদের মধ্যে ধর্মীয় ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুর গ্রামবাসীদের সাথে আলোচনা করে, ১৯৭৯ সালে, মহালয়ার দিনে একদিনের দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নিজেই পুজোর সমস্ত আয়োজন করেন। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন এবং একটি ছোট মন্দির তৈরি করেন। নিজেই মূর্তি তৈরি করেন এবং পুজোর আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুরের মৃত্যুর পর, তার পুত্র তরুণ সরস্বতী ঠাকুর পুজোর দায়িত্ব নেন। তিনি তাঁর পিতার আদর্শ অনুসরণ করে পুজোকে আরও সুন্দর ও ঐতিহ্যবাহী করে তোলেন। আজ,ধেনুয়া গ্রামের একদিনের দুর্গাপুজো একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন।
কথিত আছে সাধক তেজানন্দ ব্রম্ভচারী প্রথম তাঁর সাধনা বলে মায়ের এই মূর্তি রূপ অবলোকন করেছিলেন। এই পুজোয় একদিনেই দেবীর সপ্তমী অষ্টমী নবমী ও দশমীর পুজো হয়,শেষে দশমীর ঘট নিরঞ্জন করা হয়। এখানে মায়ের সাথে তার পরিবারে কোন সদস্য থাকে না, পরিবর্তে তাঁর দুই সখি জয়া ও বিজয়া থাকেন।
প্রতিবছর আসানসোল বার্নপুর সহ বাঁকুড়া জেলারও প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে। থাকে ভক্তদের মাঝে ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা। দীর্ঘ প্র ৪৫ বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে। চারিদিকে যখন দুর্গা পুজোর আমেজ তখন পুজো শেষ হয়ে যায় ধেনুয়া গ্রামের কালীকৃষ্ণ আশ্রমে।





