eaibanglai
Homeএই বাংলায়কোভিড অতীত, বিশ্বের মারণরোগের তালিকার শীর্ষে যক্ষ্মা, উদ্বেগ ভারতে

কোভিড অতীত, বিশ্বের মারণরোগের তালিকার শীর্ষে যক্ষ্মা, উদ্বেগ ভারতে

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- কোভিড এখন অতীত। এখনও কিছু দেশে রোগটির অন্য রূপ সক্রিয় থাকলেও কোভিডের ত্রাস পেরিয়ে এসেছে সারা বিশ্ব। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের মারণরোগের তালিকা প্রকাশ করেছে। তার শীর্ষে রয়েছে টিউবারকিউলোসিস, টিবি বা যক্ষ্মা। যক্ষ্মা রোগীর পরিসংখ্যান নিয়ে ২০২৩ সালের হু প্রকাশিত গ্লোবাল টিবি রিপোর্ট বলছে সারা বিশ্বে মোট টিবি বা যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ শতাংশ। অর্থাৎ বিশ্বের এক পঞ্চমাংশ যক্ষ্মা রোগী আমাদের দেশে বসবাস করেন। অর্থাৎ সারা বিশ্বের মধ্যে যক্ষ্মা আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে ভারত। । দেশে বর্তমানে প্রায় ২৮.২ লক্ষ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। যার মধ্যে ১২ শতাংশ অর্থাৎ ৩ লক্ষ ৪২ হাজার যক্ষ্মা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই পরিসংখ্যান যথেষ্ঠ উদ্বেগজনক।

যক্ষ্মা নিরাময়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনগুলির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি যক্ষ্মা নিরাময়ে কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এবার যক্ষ্মা নিরাময়ে কর্মসূচি গ্রহন করল পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। গত ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ১০০ দিনের একটি বৃহৎ যক্ষ্মা নির্মূল অভিযানের সূচনা করা হয়েছে। যার লক্ষ্য হল আসানসোল অঞ্চল থেকে যক্ষ্মা রোগকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা। প্রচার, জনশিক্ষা এবং সামাজিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই অভিযানের কর্মসূচি কার্যকর করা হচ্ছে।

যক্ষ্মা মূলত একটি সংক্রামক রোগ, যা মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এটি প্রধানত ফুসফুসকে প্রভাবিত করে, তবে শরীরের অন্যান্য অঙ্গকেও আক্রান্ত করতে পারে। এর সাধারণ লক্ষণগুলি হল দীর্ঘস্থায়ী কাশি, জ্বর, রাতের ঘামে ভিজে যাওয়া এবং ওজন হ্রাস। এটি সংক্রামিত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ও অন্যকে সংক্রমিত করে। সময়মতো রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা যক্ষ্মা নির্মূলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই রোগ নিয়ে সাধারণের মধ্যে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

কোভিড মহামারী-পূর্ববর্তী অবস্থার সঙ্গে পরবর্তী অবস্থা খতিয়ে দেখলে দেখা যায়, ২০২০ ও ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে প্রায় ৬০ হাজার জনের যক্ষ্মায় মৃত্যু হয়েছে। শুধু মৃত্যু হার নয়, যক্ষ্মা আক্রান্তের হারও বেড়েছে। ২০২২ সালে ১৯২টি দেশের ৭৫ লক্ষের বেশি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন। ১৯৯৫ সালে হু-র যক্ষ্মার উপর পর্যবেক্ষণের পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ এবং পুরানো সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লিখিত।

তবে যক্ষ্মা আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বের মধ্যে ভারত শীর্ষে থাকলেও আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে হু-র রিপোর্টে প্রকাশিত। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫ সালে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে ২৫৮ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত ছিল। ২০২২ সালে প্রতি ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১৯৯ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত। সচেতনতা, রোগ নির্ণয়, সঠিক চিকিৎসা, টিকাকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে এই রোগ নিমূল করা সম্ভব বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। সেই পথেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে এগিয়ে চলেছে কেন্দ্র। আর এই কর্মসূচিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments