সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– ডিএ আন্দোলনের জেরে নজির বিহীন পরিস্থিতি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। এককদিকে বরখাস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। অন্যদিকে উপাচার্যকে অপসারণের দাবি ও রেজিস্ট্রারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন আন্দোলকারীরা।
প্রসঙ্গত মঙ্গলবার বিশ্ববাদ্যালয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়ে বাধা পান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার। নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেন ডেভেলপমেন্ট অফিসার মহেশ্বর মালোদাস। তিনি জানান উপাচার্যের নির্দেশেই এ কাজ করা হচ্ছে। পরে চন্দনবাবু জানতে পারেন তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বিষয়টি জানাজানি হতেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে জড়ো হয়ে উপাচার্যের অপসারণেপ দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান শুরু করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারকে জোর করে কার্যালয়ের চেয়ারে বসিয়ে দেন। পাশাপাশি ডেভেলপমেন্ট অফিসার মহেশ্বর মালোদাসকে তাঁরা হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ ওঠে। যদিও সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা।
কিন্তু কেন হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত করা হল? উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী জানান, ফেব্রুয়ারির দু’দিন ও মার্চের এক দিন ডিএ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কর্মবিরতিতে যোগ দেওয়া শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মীদের কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর নির্দেশ জারি করেছে সরকার। কিন্তু রেজিস্ট্রারের কাছে বার বার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের হাজিরা-খাতা চেয়েও তিনি পাননি। তাই সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হন তিনি।
অন্যদিকে রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত করার পদক্ষেপ কতটা আইন সঙ্গত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উপাচার্যের এমন পদক্ষেপ করার কোনও এক্তিয়ার নেই বলে দাবি করেছেন রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি বড় অংশ। পাশাপাশি হাজিরা-খাতা চাওয়ার এক্তিয়ারও উপাচার্যের আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চন্দনবাবু। হাজিরা খাতা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠানোও হয়েছে বলেও এদিন দাবি করেন তিনি।
যদিও উপাচার্য দাবি করেছেন রেজিস্ট্রার এখনও প্রবেশনারি অবস্থায় রয়েছেন। স্থায়ী নিয়োগ পাননি। তাই সরকারি নিয়মে তাঁকে বরখাস্ত করার পূর্ণ এক্তিয়ার রয়েছে তাঁর এবং বিষয়টি বরখাস্তের চিঠিতে উল্লেখও করেছেন তিনি।