সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ– স্কুলের পাশেই সরকারি সংস্থার রাখা বারুদের স্তুপে বিস্ফোরণ ঘটানো নিয়ে আতঙ্ক ও বিতর্ক। তবে শুধু স্কুল পড়ুয়ারাই নয় ওই বিস্ফোরণের জেরে রীতিমতো আতঙ্কিত গ্রামের মানুষও। বিস্ফোরণের বিটক শব্দের পাশাপাশি তীব্রতা এতটাই ছিল যে গ্রামের মাটির বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরে যায়। বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামের এই ঘটনায় শুরু হয়েছে বিতর্ক উঠছে নানা প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত২০১৬ সালে নির্মিত হয় শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামে সরকারি মডেল স্কুল। ২০২১ সালে এই মডেল স্কুলের ৫০ ফুট দূরত্বে তৈরি হয় একটি সংস্থা। ওয়েস্ট বেঙ্গল ওয়েস্টেজ ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে সরকার অধীনস্থ ওই সংস্থার কাজ হল রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থার বর্জ্য পদার্থ নষ্ট করা। বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় এই কাজ করা হয়।। কিন্তু ওই কারখানায় হঠাৎ করে বাজি নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ বিভিন্ন সময় থানাগুলি উচ্চ শব্দসৃষ্টিকারী বেআইনী বাজি ও আতশবাজির কারবার রুখতে অভিযান চালায় ও প্রচুর বাজি উদ্ধার করে। স্থানীয়দের মতে ইদানিং সেই সকল বাজি ও আতশবাজি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে এই বেসরকারি সংস্থায়। আর সেই আতশবাজি নিষ্ক্রিয় করার ঘটনার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকার কথা জানিয়েছেন সরকারি স্কুলের পড়ুয়া শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে গ্রামের বাসিন্দারা।
গত পরশুদিন অর্থাৎ বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানার উদ্যোগে বাজেয়াপ্ত হওয়া বেশ কিছু আতশবাজি নিষ্ক্রিয় করার জন্য লরিতে করে আনা হয় এই কারখানায়। নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া চলা কালীন ঘটে বিস্ফোরণ। আর সেই তীব্র বিস্ফোরণের আওয়াজে চারিদিক কেঁপে ওঠে। স্কুলের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কোথায় বিস্ফোরণ ঘটল তা জানতে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাদে গেলে দেখতে পান স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে আগুন ও কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে, গোটা আকাশ ঢাকা পড়েছে সেই কালো ধোঁয়ায়। অন্যদিকে বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ ও ধোঁয়া দেখে আতঙ্কে পড়ে যান কারখানার অদূরে থাকা গ্রামবাসীরাও। গ্রামবাসীদের দাবি ভয়ংকর শব্দে গ্রামের একাধিক বাড়ির দেওয়াল কেঁপে ওঠে। ঘটনার পরও গ্রাম জুড়ে আতঙ্কের ছাপ। জানা গেছে ২০২১ সালে শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামে স্কুলের পাশেই নির্মিত হয় সরকার অধিনস্থ সংস্থাটি। তবে প্রশ্ন উঠছে সরকারি স্কুলের পাশেই ওই কারখানা নির্মাণে ছাড়পত্র কীভাবে পেল ওই সংস্থা?
অন্যদিকে ওই ঘটনার পরই ওই সংস্থা ও তার কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসীরা। তাদের প্রশ্ন স্কুলের অদূরে কিভাবে গড়ে উঠতে পারে এমন একটি সংস্থা যেখানে বারুদ জমা করা হচ্ছে ও তাতে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে যে কোনও দিন বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা গ্রামবাসী ও স্কুল কর্তৃপক্ষের। অবিলম্বে ওই কারখানার বাজি ও আতশবাজি নিষ্ক্রিয়ের কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা এবং শালতোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।