সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে ঝুঁকির পারাপার, তবু হুঁশ নেই প্রশাসনের। এমনই ছবি ধরা পড়েছে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের ব্লকের শিল্যা ঘাটে। যেখানে দামোদরের ওপর একটি জরাজীর্ণ ভগ্ন প্রায় বাঁশের সাঁকো দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার করেন পূর্ব বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার কয়েক হাজার মানুষ।
প্রসঙ্গত বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমান এই দুই জেলাকে ভাগ করে বয়ে গেছে দামোদর নদ। আর এই দুই জেলা যোগাযোগের শর্টকাট মাধ্যম বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের ব্লকের শিল্যা ঘাট। এখানেই রয়েছে সেই জরাজীর্ণ বাশেঁর সাঁকো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে গিয়ে একাধিকবার দুর্ঘটনাও ঘটে। বিকল্প পথ রয়েছে যা একদিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার অন্যদিকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার ঘুরপথ। স্বাভাবিকভাবেই এই দুটি জেলার যোগাযোগের জন্য শিল্যা ঘাট এলাকার মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। বাঁকুড়া জেলার একাধিক কৃষক তাদের উৎপাদিত দ্রব্য এই পথেই পূর্ব বর্ধমানে নিয়ে যান এমনকি পূর্ব বর্ধমানের হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দরকারি কাজে বাঁকুড়ায় আসেন এই পথ দিয়েই। তবে বর্ষাকালে বন্যায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। তখন নদী পারাপার করা সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়েই তখন দুই জেলার মানুষকে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয়।
এলাকার মানুষের দাবি সরকার তাদের এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করুক। স্থানীয়দের মতে এলাকায় একটি পাকা সেতু হলে উপকৃত হবে দুই জেলার প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ।
কিন্তু স্থানীয়দের দাবি শোনে কে? বরং ভাঙা এই বাশের সাঁকো নিয়ে চলছে রাজনৈতিক তরজা। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস শাসকদলকে আক্রমণ করে বলেন, ” শাসক দলের হাতে পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতি জেলা পরিষদ সব রয়েছে তবুও ১২ বছর ধরে এই ব্রিজ টি করতে পারছে না। এই সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীও জানেন তাও সমাধান হচ্ছে না।” পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু ব্যানার্জি বলেন, “পশ্চিমবাংলায় তৃণমূল সরকার আসার পর বহু জায়গায় এই ধরনের ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে, কিছু কিছু জায়গায় হয়তো এখনো হয়নি, তবে আগামী দিনে সেগুলি হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “এলাকার সাংসদ বিজেপির রয়েছে, সংসদ তহবিলেও তো প্রচুর টাকা রয়েছে। উনি কেন এই সমস্যার সমাধান করছে না সেটাও প্রশ্ন আমাদের।”
অন্যদিকে পাত্রসায়ের ব্লকের বিডিও নিবিড় মন্ডল অবশ্য দাবি করেছেন শিল্যা ঘাটে একটি ফেরিঘাট রয়েছে । আর সেখান দিয়ে দুই জেলার মানুষ সাধারণত পারাপার করেন। তবে ওই এলাকার মানুষ এখনো পর্যন্ত ব্লক অফিসে লিখিত অভিযোগ জানায়নি, তারা লিখিতভাবে জানালে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে।