সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- অবশেষে বিতর্কের জেরে স্থগিত রাখা হলো বাঁকুড়া জেলা পুলিশের ” অঙ্কুর ” প্রকল্প । গত বুধবার বাঁকুরা পুলিশের পক্ষ থেকে এই ” অঙ্কুর ” প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়। যেখানে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ইংরেজি ও অঙ্ক পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের জন্য জেলার জঙ্গলমহল এলাকার পাঁচটি থানার বেশকিছু স্কুল সহ বাকি জেলার প্রতিটি থানা এলাকা থেকে একটি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়। প্রতি থানা থেকে দুজন করে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নির্দিষ্ট করা এই প্রকল্পের জন্য। জেলার মোট ১৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে চিহ্নিত করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেয় জেলা পুলিশ।
যদিও জেলা পুলিশের ওই প্রকল্প ঘোষণার পর থেকেই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। এই প্রকল্প নিয়ে বিরোধী বিজেপি ও সিপিএম নেতাদের বক্তব্য, বাংলায় সিভিক ভলান্টিয়ার মানে ১০০ জনের মধ্যে ৯৯ জন তৃণমূলের ক্যাডার। তাঁদের কাজ হল তোলাবাজি করা। এরা পড়ুয়াদের শিক্ষাদান করবে? কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটে লেখেন, “সিভিক ভলান্টিয়াররাই এবার শিক্ষক! সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ক্লাস নেবেন অংক ও ইংরেজির! সরকারি স্কুল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা।” বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, “বাচ্চাদের অঙ্ক, ইংরেজি শেখাবে সিভিক ভলান্টিয়াররা— এর থেকে লজ্জার কিছু হয় না।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও একই সুর। রাজ্য সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে বলে দাবি করেন প্রবীন এই সিপিএম নেতা
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে যখন কিছুটা ব্যতিব্যস্ত ও বিপাকে সরকার, তখন নতুন বিতর্ক তৈরি হতেই ‘অঙ্কুর’ প্রকল্প স্থগিত করল শিক্ষা দপ্তর। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আপাতত আলোচনা করে যতক্ষণ না কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ততক্ষণ ‘অঙ্কুর’ প্রকল্প চালু হবে না বলেই জানান শিক্ষামন্ত্রী।