সংবাদদাতা, বাঁকুড়া:– বাঙালির মনে বনেদী পূজার এক বিশেষ জায়গা রয়েছে। থিম পুজোর জোয়ারেও ফিকে হয়ে যায়নি বনেদী বাড়ির পুজোর আকর্ষন। বরং বাড়ির পুজো বিশেষ করে প্রচীন ঐতিহ্যবাহী বাড়ির পুজোর জনপ্রিয়তা দিন দিন আরও বাড়ছে বলেই মনে করেন অনেকে। সেই ব্রিটিশ আমলের বাড়ি, বড় বড় জানলা সঙ্গে প্রথা মেনে ধুমধাম করে ঘরোয়া পুজো। এইরকম মায়ের বন্দনার স্বাদ একেবারে অন্যরকম। বাঁকুড়া শহরের বুকে ঠিক এইরকম একটি বনেদী পুজো হয়ে আসছে প্রায় ৩০০ ধরে। শহরের পোদ্দার পাড়ার দত্ত বাড়ির দুর্গা পূজার আমেজ একেবারে অন্যরকম। প্রথম ২০০ বছর মাটির প্রতিমা পূজিত হলেও প্রায় ৯০ থেকে ১০০ বছর ধরে অষ্টধাতুর প্রতিমা পূজিত হয়ে আসছেন এখানে।
সালটা বাংলার ১৩৩৪ -এর ৯ আশ্বিন, চন্দ্রভূষণ দত্ত এবং তার ভাইয়েরা মিলে অষ্টধাতুর দুর্গার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকেই অষ্টধাতুর প্রতিমা পূজিত হচ্ছে দত্তবাড়িতে। বছরের ৩৬৫ দিন দুই বেলা নিত্য পূজা করা হয় মাকে। নিয়ম অনুসারে অমাবস্যার পর দেবী পক্ষের শুরুতেই দেবীর ঘট স্থানান্তরিত হয় অন্যত্র এবং ঘট পূজিত হয় তখন থেকেই। আবার মহাষষ্ঠীর দিনে নতুন অলংকারে সাজানো হয় মা দুর্গাকে ।
দত্ত বাড়ির রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে বনেদীয়ানার ছোঁয়া। এখনও দত্তবাড়িতে প্রবেশ করার আগেই চোখে পড়বে কারমাইকেল নাম খোদাই করা গেট। তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড কারমাইকেল দত্ত বাড়ি অনুমোদন করেছিলেন, তারই নির্দশন স্বরূপ এই গেট। এই বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে পৌঁছে গেছেন এক অন্য জগতে। শহরের মাঝে বনেদী বাড়ির পুজোর আমেজ উপভোগ করতে হলে এবারের পুজোয় একবার ঘুরে আসতেই পারেন দত্ত বাড়িতে।