সংবাদদাতা,বাঁকুড়া:- কালীপুজোয় শব্দ বাজির দাপটে যখন জেরবার রাজ্য তখন বাঁকুড়া জেলা জুড়ে দেখা গেল ‘ইঞ্জল পিঞ্জল’-এর ধুম। এদিন সন্ধ্যা থেকেই পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, যে যার বাড়ির সামনে বাচ্চা থেকে বড়োরা পোড়াচ্ছে প্যাকাটি অর্থাৎ পাট কাঠি, আর সঙ্গে আউড়াচ্ছে একটি কবিতা, “ইঞ্জলরে পিঞ্জলরে ! আমাদের বাড়ির মশাগুলো বাইরের দিকে যা রে।”
‘ইঞ্জল পিঞ্জল’ এর তাৎপর্য দুরকম, প্রথমত লৌকিক মতে অশুভশক্তিকে তাড়ানো হয়। কালী পুজো আলোর উৎসব, এবং এই আলোর উৎসবে অগ্নির শিখায় অশুভ শক্তির বিনাশ কামনা করা হয়। দ্বিতীয়ত লোকসংস্কৃতির গবেষক সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম এলাকায় কৃষি কাজ নিয়ে বহু লোক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এবং সেই লোক সংস্কৃতিগুলির মধ্যে অন্যতম ‘ইঞ্জল পিঞ্জল’।
গ্রামগঞ্জের পাশাপাশি বাঁকুড়া শহরেও দেখা গেল ‘ইঞ্জল পিঞ্জল’ এর ধুম। শহরের বাড়িতে বাড়িতে ইঞ্জল পিঞ্জলের পাট কাঠি জ্বলতে দেখা গেল। উৎসাহী মানুষজন আগে থেকেই কিনে রাখেন শুকনো পাটকাঠি। কালীপুজোর ঘোর অমাবস্যা তিথিতে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় পাটকাঠি পোড়ানো। শহরের পাঠকপাড়ার বাসিন্দা উজ্জ্বল ভট্টাচার্য জানালেন তিনি নিজে ছোট থেকে কালীপুজোর দিন পাট কাঠি জ্বালিয়ে এসেছেন। সেই সংস্কৃতি ধরে রাখতে নিজের পুত্রকেও শেখাচ্ছেন ইঞ্জল পিঞ্জোলের রীতি নীতি। এই ভাবেই বংশ পরম্পরায় বেঁচে রয়েছে প্রাচীন এই লোক সংস্কৃতি।