জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, বাঁকুড়াঃ- ভ্রমণপিপাসু মানুষকে কখনো টানে সমুদ্র, কখনো বা পাহাড়। কেউ ছুটে যায় তীর্থস্থানে, কেউবা মন্দির শহরে। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে বনের দৃশ্য ক্যমেরাবন্দী করার জন্য ছুটে বেড়ায় বনে বনে। ভ্রমণের টানে ভ্রমণপিপাসু মানুষ ছুটে যায় দেশ থেকে দেশান্তরে। কিন্তু বাড়ির পাশেই একরাশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে বসে আছে অরণ্য সুন্দরী বাঁকুড়ার জয়পুর সেই খবর অনেকেই রাখেনা। আসলে সেভাবে প্রচারের আলোয় আনা হয়নি জায়গাটিকে। তাই হয়তো অচেনা থেকে গ্যাছে।
ট্যুরিজমকে কেন্দ্র করে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে যেমন প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে তেমনি এর থেকে সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তি ঘটে বিপুল। ফলে গত কয়েক বছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ট্যুরিজমের উপর প্রচুর গুরুত্ব দিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সম্ভাব্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট নজর দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠছে হোটেল, রিসর্ট ও রেস্টুরেন্ট। উদাহরণস্বরূপ গত চার-পাঁচ বছর ধরে বীরভূমের তারাপীঠের তো আমূল পরিবর্তন ঘটে গ্যাছে।
ঠিক একইভাবে বাঁকুড়ার জয়পুর ও তার আশেপাশের এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। কাছেই আছে মন্দিরের শহর বিষ্ণুপুর এবং মা সারদা ও রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের স্মৃতিধন্য কামারপুকুর ও জয়রামবাটি। বাঁকুড়ার বিখ্যাত অরণ্যসুন্দরী তো আছেই। বনের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় চকিতে দু’একটা হরিণ দ্যাখা যেতে পারে। আছে কুনকি হাতি। দেখলে পর্যটকদের মন ভরে যাবে।
এত কিছুর টানে একের পর এক পর্যটকরা ছুটে আসে জয়পুরে। তাদের জন্য গড়ে উঠেছে বেশ কিছু রিসর্ট। স্হানীয় বাসিন্দারাও সেখানে কাজ পাচ্ছে। ধীরে ধীরে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
কিন্তু এখনো সেভাবে এলাকাটা প্রচারের আলোয় নিয়ে আসা হয়নি। ফলে জায়গাটা অপরিচিত থেকে গ্যাছে পর্যটকদের কাছে। সব থাকতেও কিছু একটার ঘাটতি দ্যাখা যায়। মাঝে মাঝে সেভাবে পর্যটকদের দ্যাখা মেলেনা।
কথা হচ্ছিল জয়পুরের তরুণ বিডিও বিট্টু ভৌমিকের সঙ্গে। তিনি বললেন – আমাদের লক্ষ্য বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে জয়পুরের নাম তুলে আনা। যেভাবে কাজ এগিয়ে চলেছে আশাকরি শুধু বাংলা নয় গোটা দেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষের হৃদয়ে গেঁথে যাবে জয়পুরের নাম। এমনকি বিদেশী পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে।
কথা হচ্ছিল জয়পুরের একটি বেসরকারি রিসর্ট ‘বনফুল’-এর কর্ণধার অরিন্দম হালদারের সঙ্গে। তিনি বললেন – করোনার জন্য কিছুটা সমস্যা হলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আশাকরি কিছুদিনের মধ্যে এলাকাটা পর্যটকে ভর্তি হয়ে যাবে।