সংবাদদাতা,বাঁকুড়া:– দীপান্বিতা অমবস্যায় যেখানে মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়িতে বাড়িতে পূজিত হল মা কালীর দেবী মূর্তি তখন একেবারে অন্য ছবি ধরা পড়ল বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের মির্জাপুরে সাঁতরা বাড়িতে। এখানে মা কালী রূপে পূজিতা হলেন বাড়ির বড় বৌ। বছরের পর বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে সাঁতরা পরিবারে।
কথিত আছে একটা সময় এই বংশের কোন পূর্বপুরুষ মূর্তিপূজো না করার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, আদেশ পেয়েছিলেন কোন মূল্যবান ধাতু দিয়ে মায়ের মূর্তি তৈরি করে পুজো করার। মায়ের স্বপ্নদেশ বলে কথা তা কি ভাঙ্গা যায়? কিন্তু সেই সময় আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় দামী ধাতু দিয়ে মূর্তি গড়ে পুজো করতে ব্যর্থ হয়ে এক অনন্য পন্থা অবলম্বন করেছিলেন এই বংশের পূর্বপুরুষেরা। তাঁরা শুরু করেছিলেন মানবী দেবীর পুজো, সেই রীতি আজ অব্যাহত। আজও পরিবারের বড় গৃহবধূকে দেবীর আসনে বসিয়ে পুজো করা হয় সাড়ম্বরে। সেই সময় তাল পাতা দিয়ে তৈরি মন্দিরে মানবী দেবীর পুজো শুরু হয়েছিল ,এখন অবশ্য পাকাপোক্ত মন্দির তৈরি হয়েছে, আর সেখানেই চলে দেবীর আরাধনা। এই সাঁতরা পরিবারের বর্তমানের বড় গৃহবধূ হীরাবালা সাঁতরা গত ৩৮ বছর ধরে মা কালী রূপে পূজিতা হয়ে আসছেন, এবারেও তার অন্যথা হলো না। এদিন তাঁকে দেবীর আসনে বসানোর পর, গলায় রক্ত জবা এবং কপালের লাল চন্দনের তিলক দিয়ে সজ্জিত করা হয় এবং পুজো করা হয়। পুজো হয় একেবারে শাস্ত্রমতে। আর এই জীবন্ত দেবীর পুজো দেখতে এদিন দূর দুরান্ত থেকে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।