সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ- শুধু সময়ের অপেক্ষা। বাঙালির পুণ্য তীর্থ শ্রী শ্রী সারদা মায়ের জন্মস্থান জয়রামবাটীর উপর দিয়ে শুরু হতে চলেছে ট্রেন চলাচল। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে রেলপথ তৈরি ও স্টেশনের কাজ। মাতৃ মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে জয়রামবাটী স্টেশন। স্টেশনের টিকিট কাউন্টার সহ অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরির কাজও প্রায় শেষ।
বাঁকুড়ার জয়রামবাটী থেকে কলকাতায় ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের কাছে যাওয়ার জন্য মা সারদাকে জয়রামবাটী থেকে গোরুর গাড়িতে চড়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পৌঁছতে হত বিষ্ণুপুর স্টেশনে। সেখান থেকে ট্রেনে ধরে কলকাতায় পৌঁছতে হতো তাঁকে।
যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ করার পাশাপাশি এই রেলপথ নির্মাণের অন্যতম মূল লক্ষ্য হল ‘মন্দির নগরী’ বিষ্ণুপুরের সাথে জনপ্রিয় শৈবক্ষেত্র তারকেশ্বরকে সংযুক্ত করা। যদিও রেল সূত্রে জানা গেছে পুরো রেলপথ এক্ষুনি চালু হবে না। তবে বিষ্ণুপুর-জয়রামবাটী রেল চলাচল খুব শীঘ্রই চালু হবে।
প্রসঙ্গত ২০০০-২০০১ অর্থবর্ষে বিষ্ণুপুর-তারকেশ্বর রেলপথ নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০২ -২০০৩ সালে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। ২০০৬-২০০৭ সালে এই প্রকল্পের জন্য শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের কাজ। ২০০৮-২০০৯ সালে রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হয়। বিষ্ণুপুর-তারকেশ্বর রেলপথের মধ্যে বিষ্ণুপুর থেকে গোকুলনগর পর্যন্ত রেল লাইন পাতার কাজ সম্পূর্ণ হয় এবং ২০১০ সালেই ওই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বছর দুই পর সেই রেল যোগাযোগ সম্প্রসারিত হয় ময়নাপুর পর্যন্ত। কিন্তু তারপর থেকেই নানা কারণে এই প্রকল্পের কাজ শ্লথ হয়ে পড়ে। কিন্তু সম্প্রতি ওই পথে বড় গোপীনাথপুর হয়ে জয়রামবাটী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ করে ফেলেছে রেল।
জয়রামবাটীর উপর দিয়ে রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ার খবরে বেজায় খুশী জয়রামবাটী মাতৃমন্দিরের মহারাজ স্বামী শিবুরুপানন্দজি। তিনি বলেন, “দীর্ঘ ষাট বছরের বেশী সময় এখানে আছি। জয়রামবাটীর উপর রেল পথ চালু হচ্ছে, ভীষণ ভালো লাগছে। আমাদের জমিও এই প্রকল্পের মধ্যে পড়েছিল, হাসিমুখে তা আমরা সরকারের হাতে তুলে দিয়েছি। এবার শুধু মাতৃমন্দিরে আসা পূণ্যার্থীদের সুবিধা হবে তা নয়, এলাকার অর্থনৈতিক ছবিটাও পাল্টে যাবে বলে আশা করছি।”
খুশী জয়রামবাটী এলাকার মানুষও। তাঁদের মতে এই রেল যোগাযোগের ফলে শুধু দূর দূরান্ত থেকে আগত পূণ্যার্থীরাই নন, এই এলাকার মানুষও ভীষণভাবে উপকৃত হবেন।





