সংবাদদাতা, বর্ধমান:- গাড়ির ডিকিতে রাখা বিপুল পরিমাণ টাকার যথাযথ হিসাব দিতে না পারায় বর্ধমান থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল এক রাইসমিল মালিককে। ধৃতের নাম অচিন্ত্য যশ। বর্ধমান শহরের রামকৃষ্ণপল্লীর বাসিন্দা তিনি। এই ঘটনায় জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত্রে বর্ধমানের সদরঘাট সংলগ্ন তেলিপুকুর এলাকায় নাকা চেকিং চলছিল। সেই সময় একটি চারচাকা গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় প্রায় ৪০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। গাড়ির ডিকির ভিতরে ব্যাগের মধ্যে এই টাকা রাখা ছিলো বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। গাড়ির মধ্যে তিনজন মহিলা ও ২ জন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় পুলিশ গাড়িটিকে বর্ধমান থানায় নিয়ে যায়। একই সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরোহীদের বর্ধমান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ বর্ধমানের রামকৃষ্ণপল্লীর বাসিন্দা অচিন্ত্য কুমার যশ-কে গ্রেফতার করে।শনিবার তাকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত অচিন্ত্য কুমার যশ একজন রাইসমিল ব্যবসায়ী। জিজ্ঞাসাবাদে এই টাকা রাইসমিলের বলে তিনি জানান। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেনের কোনো বৈধ কাগজপত্র বা ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত কোনো নথি তিনি দেখাতে পারেন নি। এরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। কি উদ্দেশ্যে এবং কেনই বা এই বিপুল পরিমাণ টাকা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ব্যাপারে অচিন্ত্যবাবুর আইনজীবী পার্থ হাটি জানিয়েছেন, শুক্রবার একটা গাড়ি আসছিল। ট্র্যাফিক নাকা চেকিং-এ গাড়িটা ধরে। তাঁদের সন্দেহ হয়। বর্ধমান থানাকে জানায়। বর্ধমান থানার পুলিশ পৌঁছায়। গাড়ি এবং গাড়ির মধ্যে থাকা টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই টাকা পাওয়াটা সন্দেহজনক। তদন্তে সঙ্গে সঙ্গে ধরা সম্ভব নয়। যার জন্য একটা জিডি করে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠান হয়েছে। এরপর আমরা জামিনের আবেদন করি। যেহেতু এটা নির্দিষ্ট মামলা নয়, বিচারক সঙ্গে সঙ্গে জামিন দিয়ে দেন। আমরা বাজেয়াপ্ত সামগ্রী ফেরত চেয়েছি। বিচারক তদন্তকারী অফিসারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন। ৭ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছেন। রিপোর্ট আসার পর সিদ্ধান্ত হবে। তিনি জানিয়েছেন, যিনি গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর কাছে সমস্ত বৈধ কাগজ আছে। এখন উনি জামিন পেয়েছেন। এরপর সেগুলো নিশ্চয়ই দেখাবেন। থানায় অফিসারের কাছে দেখাবেন। আর গাড়ির কাগজ অনলাইনে চেক করা যায়। তিনি জানিয়েছেন, অচিন্ত্য কুমার যশ ৪ টে চালকলের অংশীদার। অপরদিকে, ধৃত অচিন্ত্যবাবুর ব্যবসায়িক অংশীদার হিমাদ্রী কুমার তা জানিয়েছেন, আমাদের রাইস মিল আছে। খুচরো এবং পাইকারী বিক্রি হয়। রাইস মিলে নগদ টাকা এবং পাকা টাকা দু’ভাবেই চাল বিক্রি হয়। ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হয়, নগদ টাকায়ও লেনদেন হয়। উনি মিল থেকে আসছিলেন। বর্ধমানে ওনার বাড়ী। টাকা কিছু সঙ্গে ছিল। পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় বাজেয়াপ্ত করে। আদালতে জামিন হয়েছে। আমরা সমস্ত নথীপথ জমা দেবো। খন্ডঘোষ, রায়নায় চারটে রাইসমিল আছে। তিনি জানিয়েছেন, অংশীদারে ব্যবসা আছে। ওই টাকা রাইস মিলের টাকা এবং চাল, খুদ, ব্রান, কুঁড়ো বিক্রির টাকা।