সংবাদদাতা, বর্ধমান:- বর্ধমান শহর লাগোয়া পালিতপুরে একটি বেসরকারী স্পঞ্জ লোহা কারখানায় ভয়াবহ বয়লার বিস্ফোরণে মারা গেলেন এক ট্রাক চালক। আহত হলেন প্রায় ১১ জন। মৃতের নাম আমির খান (২৬)। আহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। সোমবার বিকাল ৪টে নাগাদ এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং কারখানার কর্মীরা জানিয়েছেন, বিকাল ৪টে নাগাদ বিকট আওয়াজে ফেটে যায় কারখানার একটি বয়লার। গত ৪দিন ধরে এই বয়লারটি একটানা চলছিল। দুর্ঘটনার পরই তারা দেখেন একজন মারা গেছেন। তিনি ট্রাক চালক ছিলেন। বয়লার বিস্ফোরণে গলিত লোহার বার ছিটকে এসে লাগে তার গায়ে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যে পর্যন্ত প্রায় ১১জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। কারখানার কর্মী মইনুদ্দিন মল্লিক জানিয়েছেন, এন এন ইস্পাত নামে এই কারখানায় এই ব্রয়লারে সেই সময় প্রায় ২০-২১জন কাজ করছিলেন। এই কারখানায় আরও কয়েকটি ভাটি রয়েছে। কারখানার সিকিউরিটি ম্যানেজার অনুপ দত্ত জানিয়েছেন, এই কারখানায় বিহার, ছত্রিশগড়, পুরুলিয়া প্রভৃতি জায়গা ছাড়াও স্থানীয় বহু মানুষ কাজ করেন। দুর্ঘটনার পরই আহতদের দ্রুত বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য নুরুল হাসান। কি কারণে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কিছু জানাননি। কর্মীদের একাংশের বক্তব্য একটানা ৪দিন চলার জন্যই মাত্রাতিরিক্ত তাপ সৃষ্টির জন্যই এই ব্রয়লার তথা ভাটির বিস্ফোরণ ঘটে। কর্মীরা জানিয়েছেন, লোহার বিভিন্ন স্ক্রাপএখানে এনে তা গলিয়ে লোহার রড, বার, পেরেক প্রভৃতি তৈরী হত। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কারখানার একটি সেড উড়িয়ে লোহার টুকরে প্রায় দেড় কিমি দূরে ছিটকে পড়ে। বিস্ফোরণের আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ছড়ায় আতংকও। যদিও এব্যাপারে কারখানার ম্যানেজার মনোজ পাশারী জানিয়েছেন, একটা বিস্ফোরণ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর বেশি তিনি কিছু জানেন না। কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা তা নিয়েও এদিন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ম্যানেজার। অপরদিকে, এই ঘটনার পরই আহতদের দেখতে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক ব্যানার্জী। তিনি জানিয়েছেন, কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।





