সংবাদদাতা, বিজড়া:- “অন্যের কথা শুনতে হবে। শোনার অভ্যাস না করলে আপনার বলা কথা, কবিতাও কেউ শুনতে চাইবে না,” পষ্টাপষ্টি এমন কথা বলে যেন কবিতা পাঠের আসরে আসল সুরটি বেঁধে দিলেন যিনি, তিনি নিজে কবি নন, তবে, কবিতার আর কবিদের গুনগ্রাহী। তিনি এ জেলার পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ তো বটেই, রয়েছেন প্রশাসনিক গুরুদায়িত্বে। তিনি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি একাধারে বিধায়ক আবার রাজ্য সরকারের ‘আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা’র চেয়ারম্যান।
রবিবার এখানকার স্থানীয় হাইস্কুলে ‘সংবেদন’ পত্রিকার আয়োজনে ‘কবিতায় সারাদিন’ উদযাপিত হল। ওই উৎসবে পশ্চিম বর্ধমানের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানের অজস্র কবি তাদের লেখা কবিতা পাঠ করেন। আর এই পাঠের সময় শ্রোতার আসনে বসা বাকি কবিদের অসহিষ্ণুতাকে কটাক্ষ করেই তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অমন ঠেস।
এদিন বহু কবি’র পাঠ অনেকের মন ছুঁয়ে যায়, তবে, কবিতা পাঠের আগে কারো কারো বিনয়ের সাথে- ‘আমি একটা ছোট্ট কবিতা পাঠ করছি’ বলায় কবিদের আত্মবিশ্বাস এবং সতীর্থদের অসহিষ্ণুতার বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে, বারে বারে।
বিজড়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী নিজামুদ্দিন’ই ‘সংবেদন’ পত্রিকার সম্পাদক। এদিন, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে শিক্ষক গবেষক নিজামুদ্দিনের লেখা ‘আমার নজরুল’ বইটি প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের ভাইপো কাজী রেজাউল করিম। তিনি আক্ষেপ করেন, “বহু মানুষই কবি নজরুলকে ঠিকঠাক না বুঝেই তাঁর জীবনী নিয়ে লেখেন। জীবনে কখনো চুরুলিয়া না গিয়েই কবির শৈশব, তাঁর পরিবার নিয়ে অনেক কথা লিখে থাকেন।”
সারাদিনের অনুষ্ঠান সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন কবি মালতি মণ্ডল। অনুষ্ঠানকে ভরিয়ে তোলেন দুই বাচিক শিল্পী-সুচিরা সরকার আর গৌতম চক্রবর্তী।