সন্তোষ কুমার মণ্ডল, আসানসোলঃ- সম্প্রতি বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি মোবাইল রিচার্জের দাম বাড়ানোয় সমাজ মাধ্যমে ট্রেন্ড চলেছিল সরকারি টেলিকম পরিষেবা বিএসএনএলে ‘ঘরওয়াপসি’র। শুধু তাই নয় বিএসএনএলে সিম পোর্ট করানোর সংখ্যা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ খারাপ পরিষেবার কারণে বিসিএনএল সেই সুবিধা গ্রহণ করতে পারেনি। আসানসোলে বিএসএনএলের এরকমই খারাপ পরিষেবার কারণ হিসেবে উঠে এল অদ্ভুদ এক বিষয়।
জানা গেছে চিত্তরঞ্জনের ১০ নম্বর রাস্তা, ম্যাংগো এভিনিউ, ওয়ার্কস অফিস এবং মূল কার্যালয় স্টেট ব্যাংকের সামনে বিএসএনএলের চারটি টাওয়ার আছে। এই টাওয়ারগুলি ভাড়া নিয়েই পরিষেবা দেয় এয়ারটেল এবং জিও কোম্পানিও। চিত্তরঞ্জন ও সন্নিহিত এলাকায় মোবাইল পরিষেবা দেওয়া হয় এই টাওয়ার গুলির মাধ্যমে। ফলে বিএসএনএলের টাওয়ারে বিএসএনএলের পাশাপাশি এয়ারটেল এবং জিও কোম্পানির যন্ত্রপাতিও লাগানো রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ ওইসব টাওয়ারগুলি থেকে চুরি যাচ্ছে শুধুমাত্র বিএসএনএল এবং এয়ারটেলের যন্ত্রাংশ, হাত পড়ছে না জিও’র কোন যন্ত্রাংশে। এর ফলে সরকারি এই সংস্থাকে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে পরিষেবা।
বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের দাবি টাওয়ার থেক বিএসবি কার্ড খুলে নেওয়া হয়েছে – যার এক একটির আনুমানিক মূল্য ৫০ হাজার টাকা। ১০ নম্বর রাস্তার টাওয়ার থেকে ব্যাটারি চুরি হয়েছে ২৪ টি, যার এক একটির মূল্য আড়াই লক্ষ টাকা করে। এখনও তামার কেবল, প্লেট ইত্যাদি চুরি হচ্ছে। বিষয়টি জানিয়ে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন থানায় একটি জেনারেল ডায়রিও করা হয়েছিল। পাশাপাশি ২৩ ফেব্রুয়ারি বিএসএনএল আসানসোল কার্যালয়ের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার অশোক বোস পুরো বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেন চিত্তরঞ্জনের উপ মহাপ্রবন্ধককে। প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছিল চিত্তরঞ্জনের ডেপুটি চিফ সিগন্যাল টেলিকম ইঞ্জিনিয়ার, ইন্সপেক্টর ইনচার্জ/ টাউন আউট পোস্ট, আসানসোল বিএসএনএলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, উপ মহাপ্রবন্ধক প্রশাসন এবং উপমহাপ্রবন্ধক অপারেশনকে। কিন্তু অভিযোগ এরপর কাজের কাজ হিসেবে টাওয়ার ও সংলগ্ন এলাকায় সিসিটিভি লাগানোর অনুরোধ এবং আরপিএফ-এর নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ ছাড়া আর কিছু হয়নি। ফলে মহার্ঘ্য যন্ত্রাংশ চুরি চলছেই।
প্রসঙ্গত চুরি যাওয়া ব্যটারিগুলির এক একটির ওজন প্রায় ৩৫ কেজি করে। ফলে চার চাকা গাড়ি ছাড়া সেগুলি নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রয়োজন বেশকিছু লোকজনেরও। চোরেরা যে রীতিমতো আঁটঘাট বেঁধেই এই দুষ্কর্মে নেমেছে তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার হলেও পুলিশ প্রশাসন নির্বিকার।