সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ– বার্ণপুর ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রস্তাবিত আধুনিকীকরণ করা হবে। এই আধুনিকীকরণে কারখানার সম্প্রসারণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েই মঙ্গলবার বার্ণপুরের ভারতী ভবনে একটি জন শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল।
এদিনের এই জন শুনানিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত এই আধুনিকীকরনের পর সেইল আইএসপির মোট ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হবে ৭.১মিলিয়ন টন। বর্তমানে এই কারখানার ইস্পাত উৎপাদনের ক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩ মিলিয়ন টন। আধুনিকীকরণের সঙ্গে কারখানার সম্প্রসারণের মাধ্যমে কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে আরো ৪ মিলিয়ন টন করা হচ্ছে। চলতি বছরের দুর্গাপুজোর পরেই বার্ণপুর ইস্কো কারখানার এই আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
এছাড়াও দূষণ প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপ, সাম্প্রতিক সময়ে কারখানা সংলগ্ন এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ, কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণের বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে আসা আধিকারিকরা বিস্তারিত জানান। সেখানে জানানো হয় দূষণ রোধে ১৬১৩.৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। যার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা প্ল্যান্ট থেকে বায়ু দূষণ রোধে খরচ করা হবে । এছাড়াও জল দূষণ রোধ, জল সংরক্ষণ এবং দূষিত জল পুনঃব্যবহারের জন্য ২৫০ কোটি টাকা, শক্তি সংরক্ষণের জন্য ৫০ কোটি টাকা বৃক্ষরোপণের জন্য ৯ কোটি টাকা, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং দূষণ পর্যবেক্ষণের জন্য ৭.৫ কোটি টাকা ও কন্ট্রোল ল্যাবের জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ ধার্য হয়েছে।
অন্যদিকে এদিনের গণ শুনানিতে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে তাদের এলাকার সমস্যা ও অন্যান্য বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়। এই সময়ে আলোচনায় অনেকেই সিএসআরের আওতায় আইএসপির ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে উন্নয়ন, কমিউনিটি হল নির্মাণ, পানীয় জল, রাস্তার আলো বা স্ট্রিট লাইট লাগানো , জরাজীর্ণ রাস্তা তৈরি ও চাকরিতে স্থানীয় মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে এদিনের জন শুনানিতে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার কিছু মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে আগের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ পরিকল্পনায় জমি অধিগ্রহণ করে চাকরি না দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এই অভিযোগের উত্তরে কারখানার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (প্রজেক্ট )সুরজিৎ মিশ্র বলেন, খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে। সবার পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়াও, জমি অধিগ্রহণের পরে চাকরি না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের দেওয়া তালিকা মতো চাকরি দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র বয়সের কারণে হয়তো সেই সময় কেউ কেউ চাকরি পাননি। আইএসপি বা ইস্কো কারখানা কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে কারো প্রতি কোনো পক্ষপাতিত্ব দেখায়নি।
এদিন কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় যে আধুনিকীকরণ বা সম্প্রসারণের জন্য কোনো জমি অধিগ্রহণ করা হবেনা। কারখানার যে নিজস্ব জমি, বার্নপুর শহর বা তার আশপাশে রয়েছে তাতে এই কাজ হবে।