সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- আমার ছোটো বেলায় আমার দিদু বলতেন, তিনি চণ্ডী পড়ে ছিলেন, বইয়ের মলাটে পুরুষের ছবি দিয়ে। কারণ তিনি আজন্মকাল ধরে শুনে এসেছেন মেয়েদের চণ্ডী পরতে নেই, চণ্ডী পড়লে নাকি মেয়েদের দুঃখ,দুর্দশার শেষ থাকে না। কিন্তু বইপাগল মানুষ ছিলেন আমার দিদু,তাই বইয়ের মলাটের মধ্যে পুরুষের ছবি এঁকে নিজে সেই চণ্ডী পড়তেন। তবে আমার দিদু একা নন, অনেকের মনেই অনেক প্রশ্ন দানা বাঁধে এই চণ্ডী পরা নিয়ে, গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে এই চণ্ডী পড়া নিয়ে ছড়িয়ে আছে নানা কুসংস্কার! মেয়েরা কি চণ্ডী পড়তে পারে? পারলেও কী ভাবে পড়বে? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ।
স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজকে একজন জিজ্ঞেস করেছিলেন, মেয়েরা চণ্ডী পড়তে পারে? কীভাবে পড়বো?
এর উত্তরে মহারাজ বলেছিলেন যে,“ মা দুর্গা তো নিজেই মেয়ে। তাঁর লীলা পুরুষেরা পড়তে পারে কিনা এটাই প্রশ্ন হওয়া উচিৎ। কারণ চণ্ডী কাহিনী হলো নারীর হাতে পুরুষের মার খাওয়ার কাহিনী। অতএব আপনি নিশ্চিন্তে পড়তে পারেন। কিভাবে পড়বেন? যেভাবে কথামৃত পড়েন, মায়ের কথা পড়েন, সেভাবেই। ভাল হয় যদি প্রথমে ১০টা শ্লোকের অর্থ বাংলায় দেখে নিন। এবার শ্লোক পড়ার সময় কল্পনায় দেখার চেষ্টা করুন ওই চিত্র। অর্থাৎ মুখ দিয়ে পড়ুন এবং মানসনেত্রে দেখুন ঘটনা। এ অনেকটা জপের কাজ করবে। জপের সময় মুখে মন্ত্রজপ আর মানসনেত্রে ইষ্ট চিন্তা চলে। তাই তো? দেখুন এভাবে পারেন কিনা।”