eaibanglai
Homeএই বাংলায়রাজু খুনে সিবিআইঃ ভোটের মুখে চাপে পড়ল শাসক দল

রাজু খুনে সিবিআইঃ ভোটের মুখে চাপে পড়ল শাসক দল

নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমানঃ- রাজু ঝা-এর খুনের ঘটনার সঙ্গে কয়লা এবং গোরু পাচার চক্রের যোগ রয়েছে, বলে দাবি করল সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআইয়ের দুর্নীতিদমন শাখার এসপি’র গত ৯ জুন রিপোর্ট পেশ করে খুনের সঙ্গে কয়লা ও গোরু পাচারের যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন। পাশাপাশি, কয়লা পাচার কাণ্ডে দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী নরেন্দ্র নাথ খাড়কার বিরুদ্ধে সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছে তাও তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সিন্ডিকেট করে রাজু ঝা রাজ্যে কয়লার কারবার চালাত বলে সিবিআইয়ের রিপোের্ট উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, কয়লা পাচারের মামলায় সিবিআইয়ের খাতায় সে অভিযুক্ত অপরাধী ছিলনা, বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে হাইকোের্টকে জানানো হয়েছে। রাজু খুনের সময় তার সঙ্গী ছিল গোরু পাচার কাণ্ডে জড়িত আব্দুল লতিফ। রহস্যজনকভাবে সেদিন অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে সে পালাতে সক্ষম হয়। সিবিআইয়ের কাছেও বিষয়টি রহস্যজনক লেগেছে। সিবিআইয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানে রাজুকে খুনের সঙ্গে রাজ্যে চলা গোরু ও কয়লা পাচার মামলার যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই রিপোর্টকে গুরুত্ব দিয়ে রাজুকে খুনের মামলার তদন্তভার রাজ্য পুলিসের বিশেষি তদন্তকারীে সিটের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বুধবার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোের্টর বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। পুলিসের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে এবং তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে হাইকোর্টে মামলা করেন দুর্গাপুরের কয়লা কারবারী নরেন্দ্রনাথ। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের এই নির্দেশ। তবে, এদিন সিবিআইকে খুনের তদন্তের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। আজকের নির্দেশের চার মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পূর্ণ করার জন্য সিবিআইকে হুকুম করা হয়েছে। মামলার সমস্ত নথিপত্র সিবিআইয়ের হাতে দ্রুত হস্তান্তর করার জন্যও এদিন নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সিটের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করলেও, সিবিআইকে সব ধরণের সাহায্য করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।

গত ১ এপ্রিল দুর্গাপুর থেকে আব্দুল লতিফের সাদা ফরচুনার গাড়িতে চেপে কলকাতায় যাওয়ার পথে শক্তিগড়ে খুন হন রাজু। ঝালমুড়ি খাওয়ার জন্য এখানকার আমড়ায় একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল। সেই সময় একটি নীল ব্যালেনো গাড়িতে চেপে আসা তিন দুষ্কৃতি খুব কাছ থেকে রাজুকে গুলি করে। রাজুর গাড়িতে ছিলেন লতিফ। রাজুর অপর এক সঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায়ের হাতেও গুলির স্পিলন্টার লাগে। তবে, অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে ভোজবাজির মতো গায়েব হয়ে যান লতিফ। ঘটনার বিষয়ে লতিফের গাড়ির চালক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গোরু পাচার মামলায় অভিযুক্তের গাড়ির চালককে দিয়ে পুলিসের এফআইআর করানো নিয়ে সেই সময় প্রশ্নও ওঠে। বিরোধীরা এনিয়ে সরব হন। ঘটনায় প্রভাবশালী যোগের কথা তোলেন বিরোধীরা। প্রভাবশালী কাউকে আড়াল করতেই নাকি লতিফের গাড়ির চালককে দিয়ে এফআইআর করানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে পুলিস এ পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে নরেন্দ্রনাথের অফিসের এক কর্মী অভিজিত্ মন্ডল রয়েছে। নরেন্দ্রনাথের সিটি সেন্টারের অফিস থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও কিছু ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। তবে, শার্প শ্যুটারদের কেউই এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে সিটের তদন্ত। নরেন্দ্রনাথের মামলার ভিত্তিতে রাজু সিবিআই অথবা ইডির মামলায় অভিযুক্ত নাকি সাক্ষী ছিলেন তা দুই সংস্থার কাছে জানতে চায় হাইকোর্ট। কয়লা ও গোরু পাচার মামলায় শাসকদলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েটের নাম জড়িয়েছে। তার ফলে চাপে রয়েছে শাসকদল। তার উপর রাজু খুনে কয়লা ও গোরু পাচারের যোগ থাকা নিয়ে সিবিআইয়ের রিপোর্টের পর পঞ্চায়েত ভোটের মুখে শাসকদলের চাপ ও অস্বস্তি যে আরও বাড়ল তা বলাই বাহুল্য।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments