জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- গ্রামের গরীব মানুষের আয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কংগ্রেস পরিচালিত দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ২৩ শে আগষ্ট সংসদে ‘মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্মসংস্থান আইন’ উত্থাপিত হয় এবং সেটি কার্যকর হয় ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। আইনে বলা হয় গ্রামীণ পরিবারগুলির জীবিকার নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতি বছর কমপক্ষে একশ দিনের কাজ দেওয়া হবে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও মোটামুটি গ্রামের গরীব পরিবারগুলি কাজ পায়, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি ঘটে।
কিন্তু ২০১৪ সাল থেকেই এই প্রকল্পের প্রতি বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র সরকারের কুনজর পড়ে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এইরাজ্যে বিজেপি পরাস্ত হওয়ার পর কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় দু’বছরের বেশি সময় ধরে একশ দিনের প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি কাজ করেও গরীব মানুষগুলোকে নিজেদের প্রাপ্য মজুরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার একে বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে উল্লেখ করেছে। যদিও কেন্দ্র সরকারের অভিযোগ একশ দিনের কাজে নাকি এইরাজ্যে দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির তদন্তে একাধিক কেন্দ্রীয় কমিটি এলেও ফলাফল শূন্য। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি অবৈধ জবকার্ড বাতিল হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে। কিন্তু সেখানে বরাদ্দ বন্ধ হয়নি।
দাবি আদায়ের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী বারবার কেন্দ্র সরকারকে চিঠি করেছেন। নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী দিল্লিতে এবং কলকাতায় রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন। তাও প্রাপ্য বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কলকাতার রাজপথে ধর্নায় বসেছেন। কেন্দ্রের বঞ্চনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গরীব খেটে খাওয়া মানুষগুলি।
গত ৩ রা ফেব্রুয়ারি ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেন – বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র সরকার অন্যায়ভাবে তাদের প্রাপ্য বন্ধ করে দিলেও রাজ্যের বঞ্চিত ২১ লক্ষ মানুষের ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য অর্থ ২১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার তাদের এ্যাকাউন্টে দিয়ে দেবেন। তার এই ঐতিহাসিক ঘোষণার ফলে খুশির হাওয়া বয়ে যায় বঞ্চিতদের মধ্যে। দলের নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে সারা রাজ্য জুড়ে চলছে শুভেচ্ছা মিছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নামে জয়ধ্বনি দেওয়া হচ্ছে। দলীয় কর্মীদের নিয়ে আউসগ্রাম -১ নং ব্লকেও বের হয় মিছিল।
স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার বলেন – এই ঘোষণা আবার প্রমাণ করে দিল যতই বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্র সরকার বঞ্চনা করুক আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই সাধারণ মানুষের পাশেই আছেন। তার বিধানসভার মানুষের পক্ষ থেকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী ও বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন – বিজেপি-চালিত কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের জনগণকে ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনা বাবদ প্রাপ্য অর্থ থেকে গত আড়াই বছর ধরে বঞ্চিত করে চললেও আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০০ দিনের কর্মীদের তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠাবেন। তিনি যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তার জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন- আমরা এই বিষয়টি বাংলার জনগণের কাছে নিয়ে যাব এবং কেন্দ্র সরকারের দ্বিচারিতা তুলে ধরব। জানা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরও কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য আদায় না হওয়া পর্যন্ত জনগণের অধিকারের লড়াই হিসাবে কলকাতার রেড রোডে এই বিক্ষোভ চলতে থাকবে।
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/01/add-01-sanaka-4-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/01/addnew-bidhan-4-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/01/add-03-ojashotel-4-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/01/add-04-avishkar-7-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/01/add-05-astor-5-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/01/add-06-govindo-5-1024x576.gif)