নিজস্ব সংবাদদাতা,আসানসোলঃ- বৃহস্পতিবার সকালে রেল শহরে চলল বুলডোজার, গুঁড়িয়ে দেওয়া হল চিত্তরঞ্জনের সবচেয়ে বড় ও প্রধান বাজার আমলাদহি বাজারের প্রায় চার দশকের বেশী সময় ধরে চলে আসা ১৪৫টি দোকান। কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই চলে এই উচ্ছেদ অভিযান। একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা বিধায়কদের আবেদন অনুরোধ হস্তক্ষেপ কোনোটাই কাজে লাগলো না।
বৃহস্পতিবার সকালে আরপিএফ এর বিশাল বাহিনীর উপস্থিতিতে যুদ্ধকালীন ও আঁটোসাটো নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে চলে উচ্ছেদ অভিযান। অভিযানের শুরুতেই বাজারের ঢোকার মুখে বাস দাঁড় করিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর চারটি বুলডোজার একের পর এক দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দেয়।
প্রসঙ্গত শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ও বহিরাগতদের দখল থেকে মুক্ত করে রেল আবাসিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সিএলডব্লিউ। এর আগে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযানে রেল শহরের আনাচে কানাচে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। যাতে ভাঙা পড়ে প্রায় কয়েকশো দোকান ঘর বাড়ি । কিন্তু শহরের বহু পুরনো আমলাদহি বাজারে উচ্ছেদ অভিযান রুখতে একাধিক রাজনৈতিক দলের দ্বারস্থ হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এরফলে সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস সহ প্রধান রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি, তাদের শ্রমিক সংগঠনগুলি আমলাদহি মার্কেটের দোকান উচ্ছেদ না করার জন্য রেলকে অনুরোধ করেছিল। তাতে সাময়িক প্রতিশ্রুতিও মিলেছিল। বারাবনির বিধায়ক তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়, সিটু নেতা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী, কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার ও আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল- সকলেই সিএলডব্লিউ ও রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে ব্য়বসায়ীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন উচ্ছেদ অভিযান না হওয়ায়। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে এর আগে দুবার স্থগিতও হয়েছিল রেলের উচ্ছেদ অভিযান।
এদিন আমলাদহি মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান থাকা আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, আগে দু’বার উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছিলো। এদিন সব পক্ষের সম্মতিতে বিনা বাধায় ও নির্বিঘ্নে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
অন্যদিকে সর্বস্ব হারিয়ে বিপাকে পড়ছেন আমলাদহি বাজারের ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীরা। প্রায় ৪০ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই বাজারে দোকান দিয়ে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন তাঁরা। এক পলকে জীবন জীবিকা খুইয়ে এখন কীভাবে সংসার চালাবেন ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই।