জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- জঙ্গল ঘেরা আউসগ্রামের চারপাশে সবুজের ছড়াছড়ি। শীতের অবসানে দেখা দিতে শুরু করেছে কচি সবুজ পাতা। দেখলে মনে হবে সবুজ কার্পেট পাতা আছে। মন ভরিয়ে দেয়। শুকনো পাতার ঝরে পড়া মড়মড় ধ্বনি সৃষ্টি করে মোহময়ী রোমান্টিক পরিবেশের। দু’দণ্ড শান্তি পাওয়া যায়। এখন আবার আদুরিয়া জঙ্গলে খোলা মাঠে ময়ূর দেখার আশায় ভিড় বাড়ছে ময়ূর প্রেমীদের। ওদিকে আল্পনার সৌন্দর্য নিয়ে সেজে অপেক্ষা করে আছে দেবশালার লবণধার গ্রাম। সব মিলিয়ে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে এখানে।
একইসঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে বিপদের। প্রায় প্রতিবছর বিধ্বংসী আগুনের সাক্ষী থাকতে হচ্ছে জঙ্গলের গাছ ও বসবাসকারী অবলা প্রাণীদের। গাছগুলো যেমন পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে তেমনি মারা যাচ্ছে অসংখ্য প্রাণী। শোনা যায় কিছুদিন বেশ কয়েকটি ময়ূর নাকি আগুনে পুড়ে মারা গেছে। একইসঙ্গে পরিবেশ দূষণ বেড়ে যাচ্ছে। আবার চোরা শিকারীদের শিকার হতে হচ্ছে প্রাণীদের। যেন ‘বিউটি এণ্ড বিস্ট’ -এর পাশাপাশি অবস্থান!
সাধারণত অসৎ উদ্দেশ্যে কেউ কেউ বনে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। কেউ আবার শুকনো ঝরে পড়া পাতার উপর জ্বলন্ত বিড়ি বা সিগারেটের শেষাংশ ছুড়ে ফেলছে। ধরে যাচ্ছে আগুন। জঙ্গলে আগুন ধরার কারণ যাইহোক দিনের শেষে ক্ষতি হচ্ছে সবার। এবার জঙ্গল অধ্যুষিত অমরপুর অঞ্চল, দেবশালা অঞ্চল ও রামনগর অঞ্চলের একাংশের বাসিন্দাদের সচেতন করতে এগিয়ে এল স্থানীয় প্রশাসন।
১৫ ই মার্চ ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ির ওসির উদ্যোগে এবং আদুরিয়া বনদপ্তরের সহযোগিতায় একটি সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানের আয়োজন করা হয়। এলাকার বাসিন্দাদের জঙ্গলে আগুন লাগানো, বন্যপ্রাণী শিকার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি এরফলে পরিবেশের ভারসাম্যের উপর কী ধরণের কুপ্রভাব পড়ছে সেই সম্পর্কেও তাদের বোঝানো হয়।
ছোড়া থানার ওসি ত্রিদিব রাজ বললেন – প্রকৃতির ভারসাম্য ও সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতেই হবে। এখনই সচেতন নাহলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের সাধের পৃথিবীতে নেমে আসতে চলেছে চরম বিপর্যয়। প্রসঙ্গত ত্রিদিব বাবু নিজেই একজন বন ও বন্যপ্রাণী প্রেমী।