নিউজ ডেস্ক, দুর্গাপুরঃ ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার। দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালের বর্তমান অবস্থার কথা তুলে ধরতে গেলে এই আপাত বাক্যই বোধহয় মানানসই। দুর্গাপুরের গর্ব ইস্পাত নগরী আর দুর্গাপুরবাসীর অন্যতম ভরসা দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতাল। প্রত্যেক দিন কয়েক হাজার রোগীর আনাগোনা এই হাসপাতালের বাইরের চেহারার সঙ্গে বর্তমানে হাসপাতালের ভেতরের চেহারার কোনও মিল নেই। বাইরে থেকে ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং, সাজানো বাগান, পার্কিংয়ের ব্যবস্থা সবকিছু পরিপাটি করে সাজানো-গোছানো থাকলেও হাসপাতালের ভেতরের পরিকাঠামোর অবস্থা মোটেই ভালো নয়। এই ধরা যাক ইস্পাত হাসপাতালের মেডিকেল বিভাগের কথায়। যে বিভাগে বারো মাস রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে সেই মেডিক্যাল বিভাগে ঢুকতেই চোখে পড়বে ভাঙা জানালা। কবে জানালার কাঁচ ভেঙেছে তা অজানা, কিন্তু তারপর থেকে তা আর মেরামত হয় নি। কোথাও পিচবোর্ডের তাপ্পি দিয়ে আবার কোথাও ছেঁড়া পর্দা দিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে ভাঙা জানালা। সেই পর্দাও আবার অতি সাধারণ মানের। এই কনকনে শীতে ওই অবস্থাতেই রাত কাটাচ্ছেন রোগীরা। শুধু কি তাই, রোগীদের বিছানার দিকে তাকাতে গেলে তার অবস্থা আরও খারাপ। বেড তো ছেড়েই দিন, বিছানার চাদর মান্ধাত্যার আমলের। কোনও কোনও বেডে আবার সেই চাদরের অবস্থা আরও খারাপ। শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য রোগীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত কম্বল, যাও বা আছে তারও এদিক থেকে ওদিক স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়। এই যখন পরিস্থিতি তখন বাইরে থেকে হাসপাতালের চাকচিক্য দেখিয়ে কি লাভ তা জানা নেই। গত কয়েক বছর ধরে রোগীদের খাবারের মান কিছুটা উন্নত হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি ফের বদলেছে। রোগীদের যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তার গুনগত মান মোটেও ভালো নয় বলেই অভিযোগ রোগী ও তাদের পরিবারের। এরকম পরিস্থিতিতে হাসপাতালে আসা রোগীদেরও যেমন ভরসা কমছে, তেমনি ক্রমেই জনসমক্ষে আসছে দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালের বেহাল অবস্থা। ইস্পাত কারখানা কর্তপক্ষ অবিলম্বে এই হাসপাতালের প্রতি দৃষ্টি না দিলে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের পরিজনেরা।