সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- দুর্গাপূজো শেষ হয়ে গেছে কিন্তু উৎসব এখনও শেষ হয় নি। সামনে কালীপুজো, দীপাবলী, শক্তির উৎস স্বরূপিনী মা আসবেন নব রূপে। মা যখন আসেন তখন মা তো শুধু রাক্ষসকে দমন করেন না তিনি আমাদের মনের মধ্যে থাকা দুর্বলতা, হীনমন্যতা, কাপুরুষতাকে দমন করেন সমূলে। এই কারণে শক্তির জাগরণের সময় নারী-পুরুষ উভয়েরই জেগে ওঠা উচিত অন্তর থেকে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে আমাদের দুর্বলতা ভেতর থেকে গ্রাস করে, সেই দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠতে পারিনা আমরা।
হয়ত কোনও মানুষ আমাদের সাথে অন্যায় করেছেন, অধর্ম করেছেন, আমরা অন্তর থেকে জানি যা কিছু হচ্ছে তার সনাতন ধর্মের কর্মফলে নিয়ম-নীতি অনুযায়ী হচ্ছে, পূর্বজন্মের প্রারব্ধের ভোগ স্বরূপ হচ্ছে, তাও অনেক সময় আমাদের মনের মধ্যে সেই নিয়ন্ত্রণ শক্তি থাকে না, যে কারণে আমাদের সাথে যে বা যারা অন্যায় করে, যে বা যারা অধর্ম করে, আমরা জ্ঞানত তো বা অজ্ঞানত তাদের কথায় ভেবে চলি। যাতে আমাদের মন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আমরা নিজেরা কষ্ট পাই, কোনও কাজে মন দিতে পারি না। এর স্থায়ী সমাধান কিন্তু আমাদের ধর্মে আছে।
গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে বলেছেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ কর। আবার তিনিই বলেছেন কর্ম করে যাও কিন্তু ফলের আশা করো না। অর্থাৎ কর্মফলের আশা ত্যাগ করে আমাদের উচিত নিজেদের কর্তব্য কর্মকে নির্ধারণ করা, কর্মের ফল স্বরূপ ভালো বা খারাপ আমরা যাই পাই না কেন সেটাতে কষ্ট না পেয়ে, সেটাকে পূর্ব জন্মের প্রারব্ধ ভেবে নিলে আমাদের কষ্ট অনেকটা কমে যায়। আবার
প্রবাজিকা শ্রদ্ধাপ্রাণা মাতাজী বলেছেন মনের দূর্বলতা কাটিয়ে উঠতে একটি কাজ প্রতিদিন করা উচিত।
তাঁর কথায়, “রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম প্রার্থনা করবে, হে ঠাকুর, আজ সারাদিন তুমি আমার হাত ধরে থেকো। যেন মনে খারাপ চিন্তা না আসে, অসত্য না বলি, অহংকার না করি। প্রার্থনার খুব জোর তিনি শুনবেনই শুনবেন।”- কথায় বলে বিশ্বাসই মিলায় কৃষ্ণ, যাই করবেন মনের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস রেখে করবেন, বিশ্বাস ভিন্ন কোন কাজেই সফলতা আসে না।