সঙ্গীতা চ্যাটার্জী:- সৌর,গাণপত্য,শাক্ত,শৈব, বৈষ্ণব-হিন্দু ধর্ম এই ৫ মতে বিশ্বাসী। যারা সৌর ধর্মে বা মতে বিশ্বাসী তারা আসলে সূর্যের উপাসক। আবার যারা বিহারী হন তারাও সূর্যের পুজো করেন ছট পুজোর মধ্য দিয়ে। অনেকের মনে প্রশ্ন ওঠে যে সূর্য পূজা ঠিক কি কারণে ভারতে প্রচলিত! যদি আপনার মনেও এই প্রশ্ন উঠে থাকে তাহলে আজকের প্রতিবেদন আপনার জন্য।
একজন ভক্ত একবার প্রশ্ন করেছিলেন যে “সূর্য উপাসনা খুবই প্রাচীন। বিহারে ছট্ পুজোর মতো উপনিষদেও আছে। সূর্য পূজার কারণ কী? আকাশে সবচেয়ে বড় জ্যোতিষ্ক হিসেবে? মিশরে যে কারণে এই পুজো ছিল, ভারতেও কী সেই কারণেই ?”
স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ এর উত্তরে বলেছেন যে,“ঋষিরা বিভিন্ন ধর্মীয় ধারার সমন্বয় করে ঐক্য সাধনে চেষ্টা করেছিলেন। আদিবাসী ধারাগুলিকে ধ্বংস না করে স্থান দিয়েছেন। তবে তারা অনেক প্রতীককে জীবনের অঙ্গ করে ব্যাখ্যা করেছেন। সূর্য প্রসঙ্গে একই কথা। তিনটি দিক এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
১। সূর্য সবসময়ই গতিশীল কিন্তু চাঁদের মতো তার ক্ষয় বৃদ্ধি হয় না। মানুষেরও তেমনি নিজের মধ্যে শান্ত এক স্থিরভূমি রেখে জীবনকে সর্বদা গতিশীল রাখতে হয়।
২। সূর্য সব গ্রহকে আলো দিয়ে চলেছে। জীব ও তার আলোতে সঞ্জীবিত। সবকিছুকে বাঁচিয়ে রেখেছে সূর্য নিজেকে তিল-তিল করে শেষ করে দিতে দিতে। এ-রকম মানুষও বেঁচে থাকুক সমাজের কল্যাণের জন্য। বহুজন হিতায় বহুজন সহায়, জীবন এক আহুতি মানব কল্যাণের জন্য।
৩। সূর্য নিজের জ্যোতিতে দীপ্তিমান। ধার করা আলো নয়, প্রতিফলিত রশ্মি নয়, নিজস্ব আলোকে উজ্জ্বল। মানুষও তেমনি ভিক্ষার সাহায্যে নয়, নিজস্ব শক্তিতে উঠে দাঁড়াক। বই পড়া জ্ঞানের বদলে নিজের অনুভূতির কথা বলুক। অন্যদের হাততালি নয়, অনুকরণের বদলে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে গুরুত্ব দিক। সূর্য নিছক এক নক্ষত্র না হয়ে মানুষের কাছে জীবনের প্রতীক হয়ে উঠুক, এই বক্তব্য ঋষির।”