নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- ডিএসপির উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র দুর্গাপুরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সিআইএসএফের বচসা ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সিআইএসএফ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। যার জেরে বেশ কয়েকজন আহত হয় বলেও দাবি এলাকাবাসীর। প্রতিবাদে গান্ধীমোড়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ অবরোধ করে প্রতিবাদে সরব হয় এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার সকালে তামলা বস্তি সংলগ্ন এলাকায় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের জমিতে পাঁচিল ঘেরার কাজ শুরু হয়। সেই উপলক্ষ্যে ইস্পাত মন্ত্রণালয়ের জমি অধিকগ্রহণের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু করতে আসেন ইস্পাত আধিকারিকরা। অভিযোগ ইস্পাত আধিকারিকদের কাজে বাধা দেয় স্থানীয়রা এবং বচসায় জড়িয়ে পড়ে। এমনকি বস্তিবাসীরা ভূমি পূজোর প্যান্ডেল ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে ক্রমশ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী বা সিআইএসএফ-এর জওয়ানরা। এরপর দফায় দফায় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বস্তিবাসীদের। এমনকি পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ শুরু করে সিআইএসএফ। আর সেই লাঠির আঘাতে আহত হয় কয়েকজন বস্তিবাসী বলেও অভিযোগ। ক্রমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সামাল দিতে পৌঁছায় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং কমব্যাট ফোর্স।
ঘটনার প্রতিবাদে গান্ধী মোড় থেকে মায়াবাজার যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে দেয় বস্তিবাসীরা । গাছের গুড়ি রাস্তায় ফেলে চলে আন্দোলন। দাহ করা হয় ইস্পাত আধিকারিকদের কুশপুত্তলিকা । পুনর্বাসনের আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলবে বলেও হঁশিয়ারি দেয় বস্তিবাসীরা। এই প্রতিবাদ আন্দোলনের সামিল হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য ধর্মেন্দ্র যাদব। তিনিও জানান পুনর্বাসন না দিলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
অন্যদিকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল জানান না জানিয়ে ইস্পাত মন্ত্রণালয়ের আধিকারিকরা ভূমি পূজো শুরু করেছিল সেই জন্যই এই ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বস্তিবাসীদের সাথে কথা বলা হয়েছে এবং খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
উল্লেখ্য সম্প্রতি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণের জন্য বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে উচ্ছেদের নোটিশ জারি করে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা (ডিএসপি) কর্তৃপক্ষ। এএসপি মোড় সংলগ্ন বস্তি, তামলা ব্রিজ, ফরিদপুর বস্তি, পলাশডিহা, ভিড়িঙ্গি রোড, চাষিপাড়া, মেনগেট-সহ একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের উচ্ছেদের নোটিশ ধরানো হয়। যত দ্রুত সম্ভব অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে বলা হয় নোটিশে। অন্যদিকে ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের দাবি তারা কয়েক দশক ধরে ডিএসপির জমিতে বসবাস করছেন, এখন হঠাৎ করে কোথায় যাবেন? ডিএসপির উচ্ছেদ নোটিশের প্রতিবাদে ও পুনর্বাসনের দাবিতে একজোট হয়ে আন্দোলন শুরু করেন বস্তিবাসীরা। অন্যদিকে ডিএসপি’র উচ্ছেদের প্রতিবাদে সরব হয়ে বস্তিবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।