eaibanglai
Homeএই বাংলায়ডিপিএলের আবাসন ভাঙতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু শ্রমিকের, কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন

ডিপিএলের আবাসন ভাঙতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু শ্রমিকের, কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন

নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড কারখানার পরিত্যক্ত আবাসন ভাঙতে গিয়ে বিপত্তি, কংক্রিটের পিলার চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ঠিকা শ্রমিকের নাম সঞ্জয় বাগদী, বয়স ৩২ বছর। বাড়ি বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার ভৈরবপুরে। অন্যদিকে মর্মান্তিক এই মৃত্যু নিয়ে ডিপিএল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল।

প্রসঙ্গত কয়েক মাস ধরে ডিপিএলের পরিত্যক্ত আবাসন গুলি ভাঙার কাজ চলছে। ডিপিএল সূত্রে জানা গেছে পরিত্যক্ত ভগ্নপ্রায় আবাসনগুলি ভেঙে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তাই সেগুলি চিহ্নিত করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। যে ঠিকা সংস্থা এই কাজের বরাত পেয়েছে তাদের হয়েই কাজ করছিলেন ওই ঠিকা শ্রমিক। এদিন ডিপিএল টাউনশিপের বিএন টাইপের ৩৩ নম্বর আবাসনটি ভাঙার কাজ চলছিল। জেসিবি মেসিন দিয়ে চলছিল ভাঙার কাজ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি সেই সময় হঠাৎই আবাসনটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ও একটি পিলারের তলায় চাপা পড়ে যান সঞ্জয় বাগদী নামে ওই ঠিকা শ্রমিক এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে কোকওভেন থানার পুলিশ মৃত দেহটিকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

অন্যদিকে মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। তাদের দাবি ডিপিএল টাউনশিপের প্রায় ৭০ শতাংশ আবাসন বহিরাগতরা দখল করে বসবাস করছে। বার বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা সত্ত্বেও সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। অথচ যে আবাসনগুলি ফাঁকা পড়ে রয়েছে সেগুলি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এর পেছনে পরিত্যক্ত আবাসনের ইঁট ও লোহার রডের অবৈধ কারবার জড়িত বলেও দাবি তাদের। পাশাপাশি কোনোরকম উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়েই বাড়ি ভাঙার কাজ চলছিল, যার জেরেই এদিনের দুর্ঘটনা বলে দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয়দের মতে শ্রমিকদের হেলমেট সহ কোনোরকম সেফটি সরঞ্জাম তো দেওয়া হয়নি এমনকি যে জায়গায় বাড়ি ভাঙার কাজ চলছে সেই এলাকাটি ঘিরে রাখার কথা যাতে হঠাৎ করে কেউ ঢুকে পড়ে আহত বা নিহত না হয়। কিন্তু সে বিষয়েও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অবিলম্বে এই বিপজ্জনকভাবে আবাসন ভাঙার কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ডিপিএল টাউনশিপের আবাসিকরা।

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। দুর্ঘটনার জন্য ডিপিএল কর্তৃপক্ষকে দায়ি করে মৃত শ্রমিকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের কাউকে চাকরি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছে বাম শ্রমিক সংগঠন সিটু ও বিজেপি।

এদিকে এদিনের শ্রমিক মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নিয়ে শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয়ে ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র জানান, ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ডিপিএল যখনই কোনো ঠিকা সংস্থাকে বরাত দেয় চুক্তি পত্রে পরিস্কার করে নিরাপত্তার বিষয়গুলি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে কেন বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থা শ্রমিকদের কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা না নিয়ে বিপজ্জনকভাবে কাজ করছে? যদিও এই প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ডিপিএল আধিকারিকের কাছ থেকে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments