জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,দুর্গাপুরঃ- দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে প্লাস্টিক জাত বর্জ্য পদার্থ তত আমাদের সমাজকে দূষণ নামক দৈত্য দিয়ে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলছে।বাঁচার জন্য রাজ্যজুড়ে চলছে প্রচার। কিন্তু কারও মাথায় থাকছেনা ইলেকট্রনিক অর্থাৎ ই-বর্জ্য পদার্থ আমাদের সমাজকে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে চলেছে।
মানব সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েই চলেছে ইলেকট্রনিক পদার্থের ব্যবহার। আধুনিক যুগে এর ব্যবহার শুরু হয়েছিল টেলিভিশন দিয়ে। ধীরে ধীরে কম্পিউটার, ল্যাপটপ সহ হরেকরকম ইলেকট্রনিক গেজেট এসে গেছে বাজারে। প্রতিটি মানুষের হাতে হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিত্য নতুন ডিজাইনের মোবাইল। বর্তমানে
ইলেকট্রনিক পদার্থের ব্যবহার যেন ফ্যাশন সিম্বল হয়ে উঠেছে।
প্রযুক্তির ব্যবহার কখনোই অস্বীকার করা যাবেনা। কিন্তু তার কুফল সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে। এখানেই থেকে গেছে চরম ঘাটতি। একটা সময় এইসব গেজেটগুলো যখন নষ্ট হয়ে যাবে তখন কী হবে? এগুলো তো অপচনশীল পদার্থ! কোনো ভাবেই নষ্ট হবেনা। পুড়িয়ে দিলে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস বায়ু দূষণ ঘটাবে। আবার মাটিতে পুঁতে দিলে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হবে। রাস্তার ধারে ফেলে দিলে ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত হয়। তাহলে উপায়?
সমস্যা সমাধানে এবারও এগিয়ে এল দুর্গাপুরের সুপরিচিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত ও জাগো নারী’। তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় কলকাতার ‘হুলাডেক রিসাইক্লিং প্রাইভেট লিমিটেড’। এই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে দুর্গাপুরের আড়ামোড়ে প্রথমবারের জন্য স্থাপিত হয় ‘ইলেকট্রনিক বর্জ্য সংগ্রহ’ ডাস্টবিন।
ডাস্টবিন স্থাপন উপলক্ষ্যে ২৯ শে আগষ্ট দুর্গাপুরের কালীগঞ্জ সৃজনী হলে এক সেমিনার আয়োজিত হয়। কলকাতা থেকে এসে ছিলেন ‘হুলাডেক রিসাইক্লিং প্রাইভেট লিমিটেড’ এর দুই আধিকারিক দেবপ্রিথা হালদার ও পূজা ম্যাডাম।
তারা উপস্থিত শ্রোতাদের কাছে ই-বর্জ্য পদার্থের খারাপ দিকগুলো তুলে ধরেন। একই সঙ্গে কিভাবে রিসাইক্লিং এর মাধ্যমে এর থেকে আয় করা যায় সেটিও তুলে ধরেন। পাশাপাশি এইদিন এই দুটি সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি পত্র সাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত ও জাগো নারী’ সংস্থার সভাপতি ডা: উদয়ন চৌধুরী সহ সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়াও বেশ কিছু উৎসাহি স্থানীয় মানুষকে দেখা যায়।
‘হুলাডেক রিসাইক্লিং প্রাইভেট লিমিটেড’ এর অন্যতম আধিকারিক দেবপ্রিথা হালদার বললেন – ই-বর্জ্য পদার্থের রিসাইক্লিং এর ফলে পৃথিবী কেবল দূষণ মুক্ত হবেনা বেশ কিছু কর্মসংস্থান হতে পারে। সুতরাং প্রত্যেককে আমাদের অনুরোধ আপনারা সবাই পৃথিবীকে দূষণ মুক্ত করতে এগিয়ে আসুন। আমরা যৌথভাবে কাজ করি।
অন্যদিকে ডা: উদয়ন চৌধুরী বললেন – সমাজকে দূষণ মুক্ত করতে হলে অবশ্যই আমাদের সচেতন হতে হবে। নাহলে এমন একদিন আসবে যেদিন আমাদের সাধের পৃথিবী পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। সেইদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা এই সেমিনারের আয়োজন করেছি। আশাকরি আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।