নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- বর্তমান সময়ে অনলাইন আর্থিক লেনদেন জনপ্রিয় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনলাইন প্রতারণার সংখ্যাও। অসতর্ক হয়ে ব্যাঙ্ক বা কার্ডের ডিটেলস দিয়ে বা কোনও লিঙ্কে ক্লিক করে মুহুর্তে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়া যাচ্ছে গ্রাহকদের। পুলিশ ও ব্যাঙ্কে অভিযোগ জানিয়েও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই খোয়া যাওয়া টাকা আর ফেরৎ পাওয়া যায় না। তাই অনলাইন প্রতারণার শিকার হয়ে ৪২ হাজার টাকা খুইয়ে সেরকমই ভেবেছিলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা শান্তনু দাস। কিন্তু তাঁর সেই ধারনা বদলে দিল দুর্গাপুর সাইবার সেল। তাদের তৎপরতায় খোয়া যাওয়া পুরো টাকাই ফিরে পেয়েছেন দুর্গাপুরের এই যুবক।
শান্তনু জানান কয়েকদিন আগে কর্মসূত্রে তিনি মুম্বই গিয়েছিলেন। গত মাসের ২৯ তারিখ পুনে যাওয়ার জন্য তিনি অনলাইনে ক্যাব সার্চ করছিলেন। পছন্দমতো কোনও অপশন না পেলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই অজানা নাম্বার থেকে তাঁর মোবাইলে একটি ফোন কল আসে এবং ক্য়াব সেন্টার থেকে ওই কল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপরই শান্তনুবাবুকে জানানো হয় পুনে যেতে ভাড়া লাগবে ২২০০ টাকা। নির্দিষ্ট সময়ে ও লোকেশনে ক্যাব পৌঁছে যাবে কিন্তু তার জন্য ১০০ টাকা টোকেন মানি হিসেবে আগাম দিতে হবে। তার জন্য তাঁকে একটি লিঙ্ক পাঠানো হয়। এরপর ওই লিঙ্কে ক্লিক করে টোকেন মানি দিতে গেলে শান্তনুবাবুর ক্রেডিট কার্ড থেকে নিমেষে ৪২হাজার টাকা ডেবিট হয়ে যায়। তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে কার্ড ব্লক করে দেন ও টাকা কাটার বিষয়ে অভিযোগ জানান। ব্য়াঙ্ক থেকে তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁকে দুর্গাপুরের সাইবার সেলে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সেইমতো গত ১ তারিখ শহরে ফিরেই দুর্গাপুর সাইবার সেলে পুরো বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপর দুর্গাপুর সাইবার সেলের আধিকারিকদের তৎপরতায় গত ৮ তারিখ খোয়া যাওয়া পুরো টাকাটাই ফেরৎ পান তিনি।
ওই টাকা ফেরৎ পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন শান্তনুবাবু। পুরো টাকা ফিরে পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত শান্তনুবাবু নিজের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি লিখিত ধন্যবাদ পত্র লিখে উপহার দিয়েছেন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকদের। অন্যদিকে পুলিশের এই তৎপরতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছে শহরবাসীও।